MENU

Fun & Interesting

স্যারের সাথে এই বিয়ে করাটা কি আদৌ ঠিক হচ্ছে? ♥️"তাও যাকে সে বিন্দুমাত্র পছন্দ করে না? কি বিশ্রী এক..

RM motivation story 35,219 1 month ago
Video Not Working? Fix It Now

স্যারের সাথে এই বিয়ে করাটা কি আদৌ ঠিক হচ্ছে? ♥️"তাও যাকে সে বিন্দুমাত্র পছন্দ করে না? কি বিশ্রী এক.. কাগজ-পত্র গুছাচ্ছেন তিনি, মিনিট দুই-একের মাঝেই হয়তো বিয়ে পড়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। স্পর্শী বুঝতে পারছে না সে কি করবে। এই বিয়ে করাটা কি আদৌ ঠিক হচ্ছে? তাও যাকে সে বিন্দুমাত্র পছন্দ করে না? উফ! কি বিশ্রী এক অবস্থা। নিজের কপাল নিজেরই চাপড়াতে ইচ্ছে করছে তার এখন, কেন সে আগে পাত্রের ছবি দেখলো না? তার মা সাহেলা বানু কত করে বলেছিলেন একবার ছবিটা দেখতে, কিন্তু জীদের বসে দেখলো না সে। মা-বাবার পছন্দের উপরই ছেড়ে দিল সব। একবার পাত্রের ছবিটা দেখলে হয়তো আজ এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না তাকে। কিন্তু তারও বা দোষ কোথায়? কথা ছিল আজ ছেলে পক্ষ সকলে এসে দেখে আংটি পড়িয়ে চলে যাবে। সেটা ভেবেই স্পর্শী ঠিক করে রেখেছিল পাত্রের সাথে কথা-বার্তার পাঠ আজ চুকিয়ে নিবে। কিন্তু ভাগ্য যে প্রথম দেখাতেই তাদের বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ করে দিবে তা কে জানতো? স্পর্শী দৃষ্টি নত করলো, থুতনি গিয়ে ঠেকালো চিবুকে। আঁচলটা হাতের মাঝে পুরে হত্যাকাণ্ড চালালো তার উপর, ডান পায়ের বৃদ্ধা আঙুলটি অবিশ্রান্ত ঘষামাজা করতে থাকলো মার্বেল টাইস করা মেঝের উপর। উৎকন্ঠা, সংশয়,অস্বস্তিতে মন-মস্তিষ্ক অসাড় হয়ে পড়েছে। ভাবতে পারছে না সে আর কিছু। মিনিট পাঁচেক নিভৃতে গড়িয়ে যেতেই কাজীর কণ্ঠধ্বনি কানে এসে বারি খেল। বিয়ে পড়াচ্ছেন তিনি। স্পর্শী নিষ্প্রভ চাহনিতে চারদিক পরোক্ষ করলো একবার। বর ও কনে ব্যতীত সকলের মুখেই শোভনীয় হাসি। স্পর্শী দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে পুনরায় দৃষ্টি নত করলো। পলক ফেলার ব্যবধানেই তার বিয়েটা হয়ে গেল। হয়ে উঠলো সে নির্বাণ সাইয়্যেদ নামক ব্যক্তিটির স্ত্রী। _____________ চারদিকে কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ। টেবিলে উপর জমেছে মিষ্টি বক্সের স্তুপ, তার বা-দিকেই উঁকি মারছে হরেক রকমের ফলসমূহ। বাড়ির কর্ত্রীরা হয়ে উঠেছে ব্যস্ত, রান্নাঘরে চলছে মহাভোজের আয়োজন। নতুন জামাই ও বেয়াইনদের আপ্যায়নে কোন কমতি রাখতে চাচ্ছেন না তারা। কর্তারা বসেছে বৈঠকঘরে, বিয়ে-সংসার নিয়ে আলোচনা করছেন নিজেদের মধ্যে। দুইপক্ষের সাম্প্রতিক সম্পর্কে নিবিড়তা আনার ক্ষীণ প্রচেষ্টা। সোফার এক কর্ণারে আঁটসাঁট হয়ে বসে গুরুজনদের কথা শুনছে নির্বাণ। নিরংশু দৃষ্টি ঘুরছে চারদিকে। আপন লোকগুলো ব্যতীত সবই অচেনা মুখ। দুই হাত মুঠোয় পুড়ে চেপে বসো সে। চরম অস্বস্তিতে মেজাজ উগ্র হয়ে উঠেছে। অকস্মাৎ হওয়া বিয়েটা কিছুতেই হজম করতে পারছে না সে। উপরন্ত, তার বউ হচ্ছে তারই ছাত্রী। প্রথমে ধরতে না পারলেও কিছু সময়ের ব্যবধানে ঠিকই ধরতে পেরেছিল। কিন্তু ততক্ষণে সম্পূর্ণ বিষয়টাই ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে, পিছ-পা হওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিল নেই। ফোঁস করে নিশ্বাস ছাড়লো সে, স্বাদের পেশা তাকে এইভাবে আথান্তরে ফালাবে তা আগে জানলে ভুলেও এই পেশায় ঢুকতো না। বিতৃষ্ণায় 'চ' উচ্চারণ করার মত শব্দ করলো নির্বাণ। পুনরায় নড়ে চড়ে বসলো, ভাল্লাগছে না তার কিছুই। কিছুক্ষণ বিতৃষ্ণায় অতিবাহিত হতেই পাশ থেকে নাহিদ কুনোই দিয়ে নির্বাণের পেটে হালকা গুঁতো মেরে ফিসফিসিয়ে বলে, -- ভাই, তুই কি প্রেশার ফিল করছিস? বাথরুম যাবি? নাহিদের এহেন কথা নির্বাণ দৃষ্টি চওড়া করে তাকালো। কন্ঠে কঠোরতা মিশিয়ে বলে, -- ফাজলামো করিস আমার সাথে? নাহিদ অবাক হয়ে বলে, "ফাজলামো কেন করবো? তুই তো কখন ধরে কৈ মাছের মত ছটফট করছিস, তাই ভাবলাম.. " নির্বাণ নিচুস্বরে এক ধমক দিয়ে বলে, "তোকে ভাবতে কে বলেছে হ্যাঁ? নিজের ভাবনায় তালা দিয়ে বসে থাক।" " আমাকে বকা না দিলে তোর পেটের ভাত হজম হয়না? নতুন বর তুই, কই একটু লজ্জা পাবি তা না।" " তোর কি আমাকে মেয়ে মনে হয়, ষ্টুপিড? এভাবেই মাথা হ্যাং হয়ে আছে তার উপর তোর বেহুদা প্যাঁচাল। চুপচাপ বস, নাহলে তোর গাল লাল করতে আমার দেরি হবে না।" কন্ঠে তেজ রেখেই মৃদুস্বরে কথাগুলো বলল নির্বাণ। নাহিদ ভেংচি কেটে মুখ ঘুরিয়ে নিল, আপনমনে বিরবির করে কিছু একটা বলে চুপ হয়ে গেল সে। নির্বাণ নাহিদের কথা শুনেও না শোনার ভাণ করলো। আপাতত তার ভাবনা অন্য কিছুতে নিহিত। ___________ নিকষকৃষ্ণ আকাশে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে তুলো রাশির দল। তাদের মাঝেই মোহনীয় দ্যুতি ছড়াচ্ছে বৃত্তাকার চাঁদটি। মাধুর্য বাড়াচ্ছে দীর্ঘ রজনীর। এক ফালি মাধুর্যপূর্ণ আলো জানালার শিকল ভেদ করে গলিয়ে পড়ছে স্পর্শীর পায়ের নিকট। সে অংশটুকুতেই একমনে তাকিয়ে আছে স্পর্শী। গায়ে জড়ানো এখনো লাল জামদানী শাড়িটি। দেখতে তাকে শান্ত দেখালেও মেজাজ উঠে আছে তুঙ্গে। পাশে অযত্নে পড়ে থাকা মুঠোফোনটি বেজে উঠছে বারংবার। কিন্তু স্পর্শী সেদিকে কোন আগ্রহই প্রকাশ করছে না। সে ব্যস্ত সম্পর্কের সমীকরণ মিলাতে। ঘন্টাখানিক পূর্বেও সব স্বাভাবিক ছিল, অথচ কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই জীবনটা পুরো বদলে গেল তার। অগোছালো হয়ে গেল। বিয়ে নিয়ে প্রচন্ড অস্বস্তি কাজ করছে তার। মায়ের মুখে শুনেছিল, ছেলে পেশাগত শিক্ষক৷ কোন এক ভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরেই আছে। কিন্তু সেটা যে তারই ভার্সিটি এবং তারই ডিপার্টমেন্ট হবে তা সে ইহকালেও ভাবেনি। বিষয়টা যে কি বিশ্রী হয়ে উঠেছে তা না বললেই নয়। স্পর্শীর এখন প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। কেন সে, জীদের বসে না জেনে-শুনে একবারে ছেলেপক্ষের সম্মুখে গিয়ে দাঁড়ালো? আর বাবা-মাও কি ভালো মত সব খোঁজ খবর নেই? তারা বা কিভাবে পারলো হুট করে বিয়েটা দিয়ে দিতে? ধ্যাৎ!

Comment