চৈতির কোমর জড়িয়ে ধরে এক টান মেরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়,প্রহনের এহেন কান্ডে বুকের মাঝে ধক করে...
নবিনা কিশোরীর সলাজ অভিমান গাঢ় হবার আগেই কী সেই অভিমান ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে পারবে প্রহন? অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উপলব্ধি করতে পারবে তার চঞ্চলা হরিণীর হৃদয় জুড়ে বয়ে যাওয়া অভিমান নামক ঝড়ের?
এক পা দু'পা করে এগিয়ে যায় চৈতি।খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখে মিসেস ইয়াসমিন তরিঘরি করে ছুটে আসতেই বাঁধ সাধলো প্রহন,কাঠ কাঠ কন্ঠে বললো,
"ওর লড়াইটা ওকেই লড়তে হবে আম্মু।"
মিসেস ইয়াসমিন প্রহনের কথা বুঝতে না পেরে ভ্রু জোড়া কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন,
"কীসের লড়াই? এইটুকু মেয়ের আবার কার সাথে লড়াই লাগলো?"
"জীবনের লড়াই আম্মু।"
"মানে কি প্রহন? ক্লিয়ার করে বলো,এমন ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা আমার পছন্দ না।"
মায়ের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে প্রহন।
"এই পৃথিবীর বুকে টিকে থাকা এত সহজ না,পতি পদে পদে বিপদ উৎ পেতে থাকে,হাজারো বাঁধা কাটিয়ে পথ চলতে হয়।আর সেই বাঁধা কাটানোর জন্য দরকার আত্মবিশ্বাস এর। চৈতির পা কিছুটা কেটে গেছে, চাইলে আমি ওকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে আসতে পারতাম। কিন্তু এতে করে পরবর্তীতে ওর নিজের ক্ষতি হবে। এমন করলে ধীরে ধীরে আমার, তোমার কিংবা অন্য কারো প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে ও,যা আমি চাই না।ওর সকল প্রকার নির্ভরশীলতা ওর নিজের কাছে,অন্যের কাছে না। সবাই অনেক জ্ঞান দিবে,কিন্তু কেউ সাহায্য করতে আসবে না,আসে না কেউ।"
প্রহনের কথায় মিসেস ইয়াসমিন মুচকি হাসেন, তার ছোট্ট সেই প্রহন আজ কত বড় হয়ে গিয়েছে।কত কিছু কতো সহজেই বুঝতে পেরে গেছে,ভেতরে এসেই সোফার উপর বসে পড়লো চৈতি।একটা বারের জন্য ও প্রহনের দিকে তাকালো না, মিসেস ইয়াসমিন এগিয়ে গেলেন তার দিকে।
চৈতি ধীর কন্ঠে বললো,"ভালো মা পানি খাবো।"
মিসেস ইয়াসমিন ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা জগ থেকে এক গ্লাস পানি এনে চৈতির হাতে দিলো।থেমে থেমে পুরো গ্লাসের পানি শেষ করে দীর্ঘ শ্বাস ত্যাগ করে সোফায় শরীরের ভার ছেড়ে দিলো। প্রহন রুমে গিয়ে ফাস্টএইড বক্সটা নিয়ে এসে চৈতির পাশে গিয়ে বসলো,
চোখ বন্ধ চৈতির।মনে হচ্ছে ২০০ মিটার পথ দৌড়ে এসেছে,চোখ বন্ধ করে বড় বড় শ্বাস ফেলছে।
প্রহন সোফা থেকে উঠে চৈতির পায়ের কাছে ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে চৈতির কেটে যাওয়া পা হাঁটুর উপর রেখে ডেটলে ভেজানো তুলো দিয়ে