প্রিয় দর্শক,
আমি এই পর্বের মাধ্যমে আলোচনা করেছি শতাংশ ও কাঠার হিসেবে খতিয়ানের অংশ বা হিস্যা বের করার নিয়ম কি?
খতিয়ান বা পর্চা কি?
খতিয়ান যা পর্চাও তাই অর্থাৎ খতিয়ান ও পর্চা একই জিনিস। এলাকা ভিত্তিক এটাকে আরো বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। রাষ্টীয়ভাবে জরিপ করা জমি-জমার মৌজা ভিত্তিক এক বা একাদিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সংবলিত সরকারি দলিলকে খতিয়ান বলে। আইনের ভাষায় খতিয়ান হলো-জরিপকালীন সময়ে জরিপের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশ ফরম নং-৫৪৬২ (সংশোধিত) তে ভূমির মালিকানা/দাগের বর্ণনাসহ যে নথিচিত্র প্রকাশিত হয় তাকে খতিয়ান বলে। এতে মৌজার দাগ অনুসারে এক বা একাধিক ভূমি মালিকের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, মালিকানার বিবরণ, জমির বিবরণ, মৌজা নম্বর, মৌজার ক্রমিক নম্বর (জেএল নম্বর), সীমানা, জমির শ্রেণি, দখলকারীর নাম, অংশ ইত্যাদি উল্লেখ থাকে। মূলত জমির প্রকৃত মালিকের নিকট হতে খাজনা আদায় করার জন্য বাংলাদেশ সরকার খতিয়ান নং প্রস্তুত করে
খতিয়ান বা পর্চা কত প্রকার?
আমাদের দেশে সাধারণত চার ধরনের খতিয়ান রয়েছে। যথা-
১.সিএস খতিয়ান। (Cadastral Survey)
২.এসএ খতিয়ান । (State Acquisition Survey)
৩.আরএস খতিয়ান। (Revisional Survey)
৪.বিএস খতিয়ান/সিটি জরিপ। (City Survey)
সিএস খতিয়ান কি? (Cadastral-Survey)
সিএস জরিপ উপমহাদেশের সর্বপ্রথম জরিপ এটা যা ১৮৮৭ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত এটা পরিচালিত হয়। এই জরিপ ১৮৮৮ সালে কক্সবাজারের রামু থেকে শুরু হয় এবং ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায় সমাপ্ত হয়। এই সময়ে সিলেট আসাম প্রদেশের অর্ন্তভুক্ত এবং পার্বত্য চট্রগ্রাম এর জমিদারী প্রথার সাথে পাহাড়ী ও বাঙ্গালী বিরোধ থাকায় সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল দুটিকে সিএস জরিপের আওতায় নেওয়া হয় নাই। পরে ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাসত্ব আইনের (The State Acquisition and Tenancy Act, 1950) আওতায় একটি জরিপ কার্য সম্পন্ন হয়। ১৯৫০ এর The State Acquisition and Tenancy Act এর সময় পার্বত্য চট্রগাম আইনের আওতায় ছিল না তাই চট্টগাম অঞ্চলে সিএস জরিপ হয়নি।
সিএস খতিয়ান পরিচিতি বা সিএস খতিয়ান চেনার উপায়ঃ
এই খতিয়ান উপর থেকে নিচ পর্যন্ত লম্বালম্বিভাবে হয় এবং দুই পৃষ্ঠা সম্বলিত হয়। প্রথম পৃষ্ঠায় জমিদার এবং প্রজার নামে দুটি ভাগ করা থাকে। একদম উপরে লেখা থাকে বাংলাদেশ ফরম নং-৫৪৬৩। পরের পৃষ্ঠায় “উত্তর সীমানা” নামে একটা কলাম থাকে।
এসএ খতিয়ান কি? (State Acquisition Survey)
১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ সাব্যস্ত করেন। উক্ত সময়ে সরকারি আমিনগণ সরেজমিনে অর্থাৎ মাঠে
না গিয়ে অফিসে বসে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে এসএ খতিয়ান তৈরী করেন। কোন কোন অঞ্চলে এ খতিয়ানকে টেবিল খতিয়ান বা ৬২ এর খতিয়ান নামে অভিহিত করা হয় বা পরিচিতি লাভ করে।
এসএ খতিয়ান চেনার সহজ উপায়ঃ
এসএ খতিয়ান আড়াআড়ি ভাবে থাকে। এইটা সবসময় হাতের
লিখা হয়, কখনো প্রিন্ট হয় না।এই খতিয়ানে সাবেক খতিয়ানের এবং হাল খতিয়ান নম্বর থাকে।এই খতিয়ান এক পৃষ্ঠার হয়।
আরএস খতিয়ান কি? (Revisional Survey)
সিএস জরিপ সম্পন্ন হওয়ার দীর্ঘ ৫০ বছর পর আরএস জরিপ পরিচালিত হয়। আগের জরিপের ভূল সংশোধনসহ জমি, মলিক ও দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার নিমিত্তে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। পূর্বের ভূল সংশোধনক্রমে আরএস জরিপ এতইটাই শুদ্ধ করে তৈরি করা হয় যে, এখনো জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ কিংবা ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আরএস খতিয়ানের উপর নির্ভর করতে হয়।
আরএস খতিয়ান চেনার উপায়ঃ
ফরম এর একদম উপরে হাতের ডান পাশে “রেসার্তে নং” লেখা থাকে এবং খতিয়ানটি এক পৃষ্ঠার হয়।এটাও সিএস এর মত উপর থেকে নিচে লম্বালম্বি ভাবে হয়।
বিএস খতিয়ান কি? (City Survey)
বাংলাদেশে সর্বশেষ এই জরিপ ১৯৯৮-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পরিচালিত হয়। যেটির কাজ বর্তমান চলমান রয়েছে। ঢাকা অঞ্চলে ইহা মহানগর জরিপ হিসাবেও পরিচিত।
#খতিয়ানেরঅংশ #খতিয়ানেরহিস্যা #খতিয়ানকি
-Contact Information-
Phone No- 01671-043256
Email- lemon.law14@gmail.com
Face book Page Link- https://www.facebook.com/shohozain/
Instagram Link- https://www.instagram.com/advocatelemon/
Twitter Link- https://twitter.com/AdvocateLemon