আমার নিষ্ঠুর মনোহর♥️(অন্তিম পর্ব) শেষে কি হয়েছিল নিরুপমার শ্বশুরের! সে কি তার শাস্তি পেয়েছিল দেখুন..
আমার নিষ্ঠুর মনোহর♥️
ফাহমিদ কারাগারে বসে রাগে গজগজ করছে। ফাহমিদ মনে মনে ভাবছে "ওই আবসার স্যার যদি আমাকে এখান থেকে বের হতে সহায়তা না করেন তাহলে আমিও তার সমস্ত তথ্য ফাঁস করে দিবো। মরলে আমি একা মরবো না। "
আবসার কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করার অজুহাতে প্রবেশ করে।
ফাহমিদ আবসারকে দেখে বাকা হেঁসে বলে,"অবশেষে এলেন তাহলে।"
আবসার কোড ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলে ফাহমিদকে কারাগার থেকে বের হতে পারার আশ্বাস দিলেন। সেই শর্তে তিনি ফাহমিদকে চুপ থাকার নির্দেশও দিলেন।
তবে অবসারের প্ল্যান তো অন্য। প্রথমে ফাহমিদকে কারাগারে মারার চিন্তা করলেও এখন ধরা পরার ভয়ে আবসার অন্য ফন্দি এঁটেছেন
__________
নিরুপমা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর অরহান তার মা অবন্তিকাকে নিরুপমার পাশে রেখে বেরিয়ে পরে। আরিফের জোগাড়কৃত তথ্যগুলো নিয়ে অরহান সরাসরি কর্নেল মাহবুব সিরাজীর কাছে চলে যায়। প্রমাণগুলো দেখিয়ে অরহান কর্নেলকে ফাহমিদের সাথে তার সম্পর্ক ভুলে তাদের সাহায্য করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বেরিয়ে পড়ে সামরিক কারাগারের উদ্দেশ্যে।
ফাহমিদ কারাগারের ভেতরে হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে রয়েছিলো হঠাৎ কারো আসার শব্দ শুনে ফাহমিদ চোঁখ তুলে তাকায়। অরহানকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখে ফাহমিদের আত্মা কেঁপে উঠে। ফাহমিদ ভাবে এখনই বোধহয় অরহান ওকে মেরেই ফেলবে।
কিন্তু অরহান সেটা না করে চেয়ার টেনে ফাহমিদের পাশে বসে ডেভিল হাসি দিয়ে বলে," আমার বাবা যে তোমাকে এই কারাগার থেকে বের করার প্ল্যান করছেন এটা কিন্তু আমি জানি ফাহমিদ। আমার কাছে সব খবরই পৌঁছায়। তবে আমি এমন আরও অনেক খবরই জানি যেটা তুমি জানো না।"
ফাহমিদ অবাক নয়নে অরহানের পানে তাকিয়ে থাকে।
অরহান ফাহমিদের দিকে তাকিয়ে বলে,"বিশ্বাসঘাতকেরা শুধু বিশ্বাসঘাটকতাই করতে পারে।তুমি ভাবছো বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবসার তোমাকে সাহায্য করবেন! কোনো দিনও না। সে উল্টো তোমাকে মারার প্ল্যান করছে। সামরিক আদালতে হাজির করার আগেই তিনি তোমার গাড়িতে বোমা ব্লাস্ট করিয়ে তোমাকে মেরে ফেলবেন। তুমি সামরিক আদালতে গিয়েও মরবে, না গিয়েও মরবে। এই বার তুমি নিজেই ডিসাইড করো তুমি কিভাবে মরতে চাও। একলা মরতে চাও নাকি নিজের ক্রাইম পার্টনারদের সাথে নিয়ে মরতে চাও। যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে তোমাকে আর্মি কোর্ট পর্যন্ত সুস্থ ভাবে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমার। আর আরেকটা কথা আমি তোমাকে জানিয়ে রাখি তুমি বাবার তথ্য ফাঁস না করলেও তার করা সব অপকর্মের প্রমাণ আমার কাছে আছে। পাপ কখনো লুকিয়ে থাকে না।"
কথাগুলো বলে অরহান চলে যায় সিএমএইচ এর উদ্দেশ্যে। একপ্রকার দৌঁড়েই নিরুপমার কেবিনে ঢুকে যায়। নিরুপমার ঘুমন্ত মুখশ্রীর পানে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
কিছুক্ষণ পর
লামিয়া নিরুপমার রিপোর্টগুলো দেখে অরহানকে কেবিনের বাহিরে আসার জন্য ডাক দেয়। অরহান কেবিনের বাহিরে এসে লামিয়ার সাথে কথা বলতে থাকে।
নিরুপমার তখনি মাত্র ঘুম ভেঙেছিলো। অরহান আর লামিয়াকে দরজার বাহিরে একসাথে কথা বলতে দেখে নিরুপমা ইনসিকিউরিটি ফিল করে। অরহান কথা শেষ করে গম্ভীর হয়ে কেবিনের ভেতরে প্রবেশ করে।
নিরুপমাকে ঘুম থেকে উঠে যেতে দেখে অরহান মলিন হাসি দিয়ে বলে," উঠে গেছো নিরু।"
নিরুপমা অভিমান নিয়ে তাকিয়ে বলে," আমি আর এখানে থাকতে চাই না। আমি বাসায় যেতে চাই।"
"তুমি তো এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি নিরু। তোমাকে আরো কিছুদিন এখানে থাকতে হবে।"( অরহান)
নিরুপমা অভিমান করে বলতে থাকে,"আপনার এখন আর আমাকে ভালোলাগে না তাই না? আমার সৌন্দর্য তো ম্লান হয়ে গেছে। আমার সৌন্দর্য দেখেই তো আপনি বিয়ে করেছিলেন আমাকে।এখন আর আমার মধ্যে আপনি মুগ্ধতা খুঁজে পাননা তাই না? ওই ডাক্তার লামিয়ার সাথে আপনার এতো কিসের কথা? "
নিরুপমার এসব কথা শুনে অরহানের প্রচন্ড রাগ অনুভূত হয় নিরুপমার উপর। তবে অরহান রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে থাকে। নিরুপমা এখন অসুস্থ এই বিষয়টাও অরহানের খেয়াল রাখতে হবে।
অরহান নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে গম্ভীর কণ্ঠে বলে,"কিসব অবান্তর কথা বলছো তুমি নিরু?"