MENU

Fun & Interesting

মুরগির খামার করে লস খেতে না চাইলে অবশ্যাই দেখবেন। মুরগির রাণী ক্ষেত রোগ কেন হয় এ রোগ হলে কি করবেন ?

Video Not Working? Fix It Now

আপনার সফলতা তুলে ধরতে আমরা আছি আপনার পাশে যে কোন খামারের প্রতিবেদন তৈরি করতে যোগাযোগ করুন 01753447456 রানীক্ষেত রোগ কিভাবে ছড়ায়ঃ ১। আক্রান্ত মুরগীর মাধ্যমে ছড়ায়। ২।মুরগীর লালা, হাচি, ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায়। ৩।মৃত মুরগী যেখানে সেখানে ফেলে রাখলে বিভিন্ন পাখি যেমন কাক, শকুন, চিল, এবং শিয়াল ,কুকুরের মাধ্যমে ছড়ায়। ৪। আক্রান্ত খামারের কমীদের পোশাক , জুতা, স্যান্ডেল,বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ছড়ায়। ৫।এছাড়া ভাইরাস খামারের পরিবেশে থাকে , ফলে বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায় । রানীক্ষেত রোগের লক্ষণঃ এই রোগ যে কোন বয়সের মুরগীর হতে পারে । কিছু লক্ষন দেখে সহজেই বোঝা যায়। লক্ষন গুলো নিম্নরুপ—- ১।ডায়রিয়া ২। চোখ বন্ধ করে ঝিমাতে থাকে । ৩।সবুজ পায়খানা করে। ৪।মুরগীর ডানা ঝুলে পড়ে। ৫।শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর মিলনস্থল অবস হয়ে যায়, ফলে খাবার গ্রহন কমিয়ে দেয়। ৬।আ্ক্রান্ত মুরগী পানি শুন্যতায় ভোগে, এবং ল্যাংড়া হয়ে যেতে পারে। ৭। লেয়ার মুরগী ডিম পাড়া কমিয়ে দেয়। ৮। মলাশয় ফুলে বড় হয়ে যায়, ফলে চুনে পায়খানা আটকে থাকে। ৯।সদি কাশি থাকতে পারে। ১০। শ্বাস কষ্ট দেখা যাবে, ফলে মুরগী হা করে নিশ্বাস নেয়। ১১। কোন কোন সময় মাথা ঘুরাতে থাকে ,ঘাড় বেকে যায়। পোস্ট মটেম লক্ষণ / ময়না তদন্ত ফলাফল ঃ খালি চোখে যা যা দেখা যায়ঃ ১।মুরগীর প্রভেন্টিকুলাসে ও গিলার উপরে যে আবরন থাকে তার নিচে স্পষ্ট রক্ত বিন্দু পাওয়া যাবে। ২।ক্ষুদ্রান্তে এবং সিকাল টন্সিলে বোতামের মত ক্ষত পাওয়া যাবে। ৩।মুরগীর প্লীহাতে অসংখ্য সাদা স্পট পাওয়া যাবে। ৪।শ্বাস নালীতে জমাট রক্ত পাওয়া যাবে। ৫। ফুসফুসে রক্তবিন্দু পাওয়া যাবে। ৬।ওভারিয়ান ফলিকল নরম এবং ভাংগা ভাংগা হবে। চিকিৎসাঃ ১। রানিক্ষেত রোগ একটি ভাইরাস জনিত , ভাইরাসের বিরুদ্ধে তেমন কাযকারী কোন ব্যবস্থা নাই। তবে secondary infection এর হাত থেকে বাচার জন্য যে কোন একটি এন্টিবায়োটিক দিলে ভাল কাজ করে। ২। এছাড়া মুরগী পাতলা পায়খানা করলে ইলেক্ট্রোলাইট দিতে হবে। ৩। এই রোগ হলে মুরগী দুবল হয়ে পড়ে, ফলে পানিতে দ্রবনীয় ভিটামিন দিলে ভালো কাজ করে। এছাড়া টিমসেন প্রতিদিন খামারের চারপাশে স্প্রে করতে হবে। চিকিৎসা হিসেবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কতটা যুক্তিযুক্ত বা সেটা কতটা কার্যকরী তা নিয়ে আছে মতবিরোধ। কেউ শুধু লাইভ ভ্যাকসিন আবার কেউ লাইভ এবং ১ দিন পর কিল্ড ভ্যাকসিন দেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এইখানে আমার নিজস্ব কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে চাই। ১। ভ্যাকসিনেশনঃ morbidity ৫% এর বেশি হলে চিকিৎসা হিসেবে ভ্যাকসিনেশন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এরকম ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনেশনের দিকে না যাওয়াই উত্তম। একটা বিষয় মনে রাখা দরকার যে জীবাণু যেখানে বাসা বেঁধে আছে সেইখানেই কিন্তু ভ্যাকসিন-ভাইরাস বাসা বাঁধবে অর্থাৎ বংশবিস্তার করবে। সুতরাং রোগ বেশি আকার ধারণ করলে ভ্যাকসিন কাজ করার মতো Respiratory tract এ জায়গাই পাবে না। যদি ভ্যাকসিন করতেই হয় তবে Lasota স্ট্রেইন এর ভ্যাকসিন করতে হবে। আর একটি কথা, এই রোগে যেহেতু মুরগি ঝিমায়, পানি ও খাদ্য খাওয়া কমিয়ে দেয়, তাই ভ্যাকসিন দ্বিগুন ডোজে করতে হবে। ** ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে কোন জীবানুনাশক দিয়ে স্প্রে করা যাবে না। তাতে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। ভ্যাকসিন প্রয়োগের ৩ দিন পর আবার স্প্রে করা যাবে। অনেকে জীবানুনাশক যেমন Timsen খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে চাইলে টিমসেন খাওয়ানো যাবে না। ২। জীবানুনাশক ব্যবহারঃ ভ্যাকসিন ব্যবহার করে চিকিৎসা করতে না চাইলে যেকোন কার্যকরী ভাইরাস প্রতিরোধী জীবানুনাশক দিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে। যেমন টিমসেন, ভিরকন এস ইত্যাদি। অনেকে টিমসেন খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন, এক্ষেত্রে খাওয়ানোর মাত্রা হবে ১গ্রাম/৪লিটার পানিতে ৪-৬ ঘণ্টার জন্য। ৩। এন্টিবায়োটিকঃ যেহেতু এটি ভাইরাস জনিত রোগ, তাই এখানে এন্টিবায়োটিকের খুব বড় কোন ভূমিকা নেই। সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত এন্টিাবায়োটিক হলো সিপ্রোফ্লক্সাসিন ব্যবহারের কারন এটি খুব দ্রুত রক্তে মিশে যায় এবং এর বায়োলজিক্যাল হাফ লাইফও যথেষ্ট(৪ ঘণ্টা) আর Bioavailability ৬৯%। ডোজ ১মিলি/২লিঃ পানিতে, আবশ্য আমরা ১মিলি/লিঃ পানিতে প্রয়োগ করার পরামর্শই বেশি দিয়ে থাকি। **ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে থাকলে তার ৮ ঘণ্টা পর এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যায় ৪। অন্যন্য ঔষধঃ যেহেতু ভাইরাল ডিজিজ আর এন্টিভাইরাল কোন ঔষধ প্রয়োগ সম্ভব হচ্ছে না তাই মুরগির নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় এন্টিভাইরাল ড্রাগ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এমন ঔষধ যেমন Imm0fast (নাভানা এনিমেল হেলথ), Immolyte (স্কয়ার), Immuno Care(এভোন এনিম্যল হেলথ) ইত্যাদির যেকোন একটা ১মিলি/লিঃ -এ প্রয়োগ করে বেশ ভালো ফল পাওয়া গিয়েছে। এগুলো ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বাড়াতেও সহায়তা করে। ৫। ভিটামিন-ই ও সেলিনিয়ামঃ সেলিনিয়ামের ভাইরাস প্রতিরোধী গুণ রয়েছে। যা ভাইরাসকে মারতেও সহায়তা করে তাই সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে ভিটামিন-ই ও সেলিনিয়াম ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে অনেক কোম্পানির ই-সেল পাওয়া যায়, যেমনঃ E-Sel(Square), Sel-E(Popular), Bio-Sel-E(Avon), Selcon forte (Prime care) ইত্যাদি। এর যেকোন একটা ১মিলি/লিঃ-এ প্রয়োগ করে বেশ ভালো ফল পাওয়া গিয়েছে। যদি চিকিৎসা হিসেবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা না হয়ে থাকে তবে রোগ ভাল হয়ে যাবার পরপরই লাইভ ভ্যাকসিন এবং তার ১ দিন পর ক্ল্ডি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। ভ্যাকসিন প্রয়োগের ১৫ দিন পর এন্টিবডি টাইটার লেভেল টেস্ট করা উচিৎ।

Comment