বুদ্ধিমান মানুষ চেনার উপায় ।। কামরান চৌধুরী
কেউ জন্মগত বুদ্ধিমান তৈরি হয় না। বুদ্ধিমান হতে হলে পড়াশোনা করতে হয়। বুদ্ধিমান মানুষেরাই জীবনে সফল হয়। মানুষের বুদ্ধিমত্তা নিজে থেকে নির্ণয় করা যায় না। এমনকি অন্যরা আপনাকে যদি বুদ্ধিমান বলে মনে নাও করে তার পরেও আপনার কিছু লক্ষণ দেখে বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। কিভাবে বুদ্ধিমান মানুষ চেনা যায় তা জানা দরকার। আপনি যে বুদ্ধিমান তা কি করে বুঝবেন। বুদ্ধিমানদের চালচলন, কথাবার্তা ও দৃষ্টিভঙ্গি অন্যদের তুলনায় ভিন্ন হয়ে থাকে। বুদ্ধিমান মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যা তাদেরকে প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা এনে দেয়। চলুন জেনে নিই সেই বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি যা তাদেরকে সেরাদের সেরায় রূপান্তরিত করে।
বুদ্ধিমান ব্যক্তির হৃদয় সাধারণত উদার ও অত্যন্ত কোমল প্রকৃতির হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেমানুষি তাদের অন্য সবার থেকে আলাদা করে তোলে।
বুদ্ধিমান মানুষরা বিশ্বাস নয়, যুক্তি এবং তথ্যের ভিত্তিতে কথা বলেন। তারা তাদের আবেগে নয় বরং তাদের মেধার উপর নির্ভর করে। আর এটা জ্ঞানী মানুষের বৈশিষ্ট্য।
কোনো বিষয় জানা না থাকলে ‘জানি না’-এ কথাটা বুদ্ধিমান ব্যক্তি সহজেই স্বীকার করে নেন। তারা অযথা পাণ্ডিত্য প্রদর্শনের চেষ্টা করেন না। বরং বুদ্ধিমানেরা সবসময় না জানা বিষয় গুলো জানতে বেশি আগ্রহী থাকে।
অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো বুদ্ধিমান মানুষের লক্ষণ। তাই সহজে জ্ঞানী চেনার উপায় হলো উক্ত ব্যক্তির শ্রদ্ধাবোধ দেখা।
বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা নিজের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। অন্যের ভুল ধরতে অযথা নিজের সময় ব্যয় করে না। তবে ভুল যাতে পরবর্তীতে কারো না হয়, সে বিষয়ে অনেক সময় দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। একারনে তারা সবার প্রিয় হয়ে থাকে।
বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের প্রশ্ন প্রতিটি মানুষকে ভাবিয়ে তুলবে।
বুদ্ধিমান মানুষের মনে বেশি পরিমান প্রশ্ন থাকে যার উত্তর তারা খুজতে থাকে। তারা সবসময় কোনো বিষয় সম্পর্কে গভীর ভাবে ভাবতে পছন্দ করেন। আর সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার মধ্য দিয়ে তারা অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারে।
বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা অনেক সময়েই ছিদ্রাণ্বেষী হয়ে থাকেন।
বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের সেন্স অব হিউমার অনেক বেশি থাকে। তারা যে কোনো বিষয়ে বা কথা থেকে জোকস বানাতে তারা ওস্তাদ। যে কোনো কথার ডাবল মিনিং করতে সৃজনশীলতার প্রয়োজন হয়। শুধুমাত্র যাদের চিন্তা শক্তি প্রখর তারাই এটি করতে পারে। তাই জোকস কোন বোকামী নয় , এটি বুদ্ধিমানতাও প্রমান করে।
বুদ্ধিমানরা কোনো না কোনো নেশায় আসক্ত থাকে। সেটা ছবি তোলা বা বই পড়ার নেশাও হতে পরে। এরা ব্যস্ত শপিং মলেও মোবাইল খুলেও প্রয়োজনীয় পড়াশোনা করতে পারেন।
গান-বাজনা শেখার প্রতি আগ্রহ দেখা যায় বুদ্ধিমানদের।
অপ্রয়োজনীয় কোন তথ্য বুদ্ধিমানরা মাথায় রাখতে চান না।
বুদ্ধিমানদের রাত জেগে থাকার অভ্যাস থাকে। শব্দ বুদ্ধিমানদের পছন্দ হয় না। তাই রাতের বেলায় শান্ত পরিবেশে নিজের কাজ বা পড়াশুনা করা জিনিয়াসদের অভ্যাস।
বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা সাধারণত ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ডুবে থাকেন।
বুদ্ধিমান ব্যক্তি সর্বদা বিভিন্ন বিষয়ে নিজের জ্ঞানবৃদ্ধির চেষ্টা করেন এবং এর জন্য তারা সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করে থাকে।
ঘুমের আগে সারা দিনের সব কাজ গুলোর কথা চিন্তা করে দেখেন বা সব কাজের বিচার বিশ্লেষন করেন। আগত দিন গুলোতে আসা সমস্যা গুলো সমাধান করতে ব্যাস্ত থাকেন ঘুম চোখে।
বুদ্ধিমানেরা শক্তির তুলনায় বুদ্ধি বেশি প্রয়োগ করে থাকে। গবেষণায় প্রমাণিত- যে যত বেশি বুদ্ধি প্রয়োগ করে সে তত বেশি ক্লান্ত ও দূর্বল হয়ে পড়ে। বুদ্ধিমানদের সব সময় মাথাতে কিছু না কিছু ঘুরতে থাকে। তাই সাধারণত এরা কুড়ে হন।ভাবনাতে এতোটাই ব্যস্ত থাকেন যে ছোট বিষয়ে জিনিসগুলো ভুলে যাওয়াটা তাদের সব থেকে বড় অভ্যাস।
বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা নিজের সাথে কথা বলতে বেশি পছন্দ করেন। যারা কঠিন সময়ে নিজের সাথে কথা বলে তারা নিজেদের সব থেকে বড় বন্ধু হয়ে থাকে। এক কথায় তারা নিজেকে ভালো ভাবে চিনে। ফলে কঠিন সময়ে নিজেই নিজেকে মোটিভেসন দিতে পারে। আর এতেই আসে সফলতা।
সব বিষয়েই কৌতূহল থাকা ভালো। এতে কোথায় কী ঘটছে, কেন ঘটছে এসব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। যদি এসব বিষয়ে আগ্রহী হন, তবে আপনিও একজন বুদ্ধিমান মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বুদ্ধিমানরা জ্ঞানী হয়ে থাকেন। কারণ তারা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে আগ্রহী।
আবেগ দিয়ে কখনো ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাই বুদ্ধিমানরা যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখান না বরং সিদ্ধান্তের আগে বিশ্লেষণ করেন।
বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের স্মৃতি অনেক ভালো হয়ে থাকে। তারা কম সময়েই অনেক কিছু শিখতে পারেন। কারণ মেধাবীরা যে কাজটি করেন, তা মনোযোগ সহকারে করেন।
বুদ্ধিমান মানুষ সর্বদা কঠোর পরিশ্রমী হয় না। গবেষকরা জানিয়েছেন, আলসে মানুষ মাত্রই যে, বুদ্ধিমান তা নয়। তবে বহু আলসে মানুষই বুদ্ধিমান।
আপনি নিজেকে বিচার করে দেখুন বুদ্ধিমানের কাতারে পড়েন কি না?