আমার নিষ্ঠুর মনোহর♥️(শেষ পর্ব-১) নিরুপমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে! কিন্তু কেন জানেন...
আমার নিষ্ঠুর মনোহর♥️
ডিউটি শেষ করে বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে অরহানের অনেক দেরি হয়ে যায়। ব্যস্ততার কারণে নিরুপমার কল সে রিসিভ করতে পারেনি। অরহান মনে মনে ভাবে,"নিরুটা মনে হয় বড্ড অভিমান করে বসে আছে।"
অরহান বাসায় পৌঁছে দেখে ঠিকই নিরুপমা রাগ করে বসে আছে। চোঁখ মুখ ফুলিয়ে রেখেছে। নিরুপমার থুতনিতে হাত রেখে অরহান শুধায়," কান্না করেছো কেনো? আমি কি মরে গেছি?"
"একদম বাজে কথা বলবেন না। "( নিরুপমা)
"তাহলে কান্না করেছো কেনো? একটু ব্যস্ত ছিলাম আমি সেজন্য তোমার কল রিসিভ করতে পারিনি। আম সো স্যরি নিরু।"( অরহান)
অরহানের আদুরে বাক্য শুনে নিরুপমা খুশি হয়ে যায়। অরহানের বুকের ভেতর লুকিয়ে পড়ে। নিরুর এমন আচরণে অরহান একটু অবাক হয় বটে। তবে নিরু যে তার কেয়ার করছে, তাকে নিয়ে ভাবছে এটা চিন্তা করে মনে মনে আনন্দিত হয়।
অরহান বাড়ি ফিরে আসার পর থেকেই নিরুপমা বারবার অরহানের সামনে ঘুরঘুর করছে। নিরুপমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে অরহান নিজে থেকেই নিরুপমাকে কাছে টেনে নেয়।
শাড়ির আঁচল সরিয়ে নিরুপমার উন্মুক্ত পেটে হাত বুলাতে থাকে। নিরুপমা কেঁপে উঠে অরহানের হাত খামচে ধরে। তবে সরে যাওয়ার চেষ্টা করে না। অরহান মোহনীয় দৃষ্টিতে নিরুপমার পানে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ। হঠাৎই অরহান নিরুপমাকে নিজের নিচে ফেলে নিরুপমার কপালে, গালে, গলায় অজস্র চুমু এঁকে দিতে থাকে। নিরুপমার অদ্ভূত ভালো লাগছে অরহানের এই ভালোবাসার স্পর্শগুলো অনুভব করতে।
তীব্র অনুভুতি নিয়ে অরহান নিরুপমার অধর স্পর্শ করতে নিলে নিরুপমা হঠাৎ অরহানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বাথরুমে গিয়ে গরগর করে বমি করতে থাকে।
অরহান অস্থির হয়ে বাথরুমের দিকে ছুটে যায়। নিরুপমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মুখে পানি ছিটিয়ে দিতে থাকে। নিরুপমা একটু সুস্থ হলে অরহান নিরুপমাকে কোলে করে বিছানায় বসিয়ে পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে পানি খেতে বলে। নিরুপমা পানি খেয়ে অরহানের পানে চেয়ে থাকে।
" তোমাকে মানা করেছিলাম না রাস্তার ধারে বসা দোকান থেকে ফুচকা না খেতে। দেখেছো অসুস্থ হয়ে গেলে না। কালকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো। এখন ঘুমিয়ে পড়ো।"
অরহান নিরুপমাকে নিজের বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে। তবে নিরুপমার মনে তো অন্য চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। নিরুপমার পাকনা মন তাকে বলছে সে মা হতে চলেছে। অরহানের কাছে নিজের ভালোবাসা প্রকাশের আগেই কি অরহানের ভালোবাসার চিহ্ন তার গর্ভে এসে পড়লো! নিরুপমা এসব ভেবে মুচকি হেসে অরহানের বুকে মুখ গুঁজে ঘুমিয়ে পড়ে।
________
সকালে অরহান রেডি হয়ে চা খেতে খেতে নিরুপমাকে বলে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিতে। অরহান আজ নিরুপমাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাবে।
নিরুপমা অরহানের সামনে এসে পট করে বলে বসে,"আমার কোনো অসুখ হয়নি। আমার বাচ্চা হবে।"
নিরুপমার কথা শুনে অরহান বিষম খেয়ে যায়। মাত্র চায়ের কাপে অরহান চুমুক দিয়েছিলো নিরুপমার কথা শুনে চা অরহানের গলায় গিয়ে ঠেকে। চায়ের কাপ পাশে রেখে জোরে জোরে কাশতে থাকে। নিরুপমা অরহান পিঠ চাপড়ে কাশি বন্ধ করার চেষ্টা করে।
কিছুক্ষণ পর অরহান একটু স্বাভাবিক হলে অবাক দৃষ্টি নিয়ে নিরুপমার পানে তাকিয়ে শুধায়,"সো.. সত্যিই নিরু! তুমি কিভাবে জানলে?"
নিরুপমা মিষ্টি হাসি দিয়ে নিজের পেটে হাত রেখে বলে,"আমার সেটাই মনে হচ্ছে।"
অরহান উঠে নিরুপমার বাহু চেপে ধরে অস্থির কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো," মনে হচ্ছে মানে কি? তো.. তুমি শিওর না?"
"শিওর হবো কিভাবে? আমি তো টেষ্ট করায়নি। আজকে গিয়ে টেষ্ট করাবো।"( নিরুপমা)