অমৃতময় শ্রী শ্রী চৈতন্য ভাগবত কথা // শ্রীমৎ সদানন্দ দাস বাবাজী মহারাজ // শ্রীধাম নবদ্বীপ
#Sadananda_Das_babaji
#Chaitanya_Bhagwat
#Chaitanya_Charitamrita
#Shyamsundar_Kirtan_Jagat
🙏অমৃতময় শ্রী শ্রী চৈতন্য ভাগবত কথা, শুনলে মন প্রাণ জুড়িয়ে যাবে 🙏
👉ভালো লাগলে অবশ্যই ভিডিও টি Like, Share ও Comment করবেন আর অবশ্যই channel টি Subscribe করবেন 🙏
👉সুন্দর কীর্তন ও ভাগবতের ভিডিও পেতে এখুনি Facebook Page টি Follow করুন 👇
https://www.facebook.com/ShyamsundarKirtanjagat/
Shyamsundar Kirtan Jagat
👉আরও সুন্দর সুন্দর ভিডিও পেতে এখুনি YouTube Channel SUBSCRIBE করুন 👇
https://youtube.com/channel/UCxTF71V5IU0bksgxI9CYEzA
Shyamsundar Kirtan Jagat
🙏অসংখ্য গ্রন্থাদি পাঠ করেও কৃষ্ণতত্ত্ব বা গৌরতত্ত্ব সম্বন্ধে সঠিকরূপে
অবহিত হওয়া অসম্ভব। তার কৃপা ছাড়া তাঁকে জানা যায় না ।
তিনি অব্যক্ত—কোন কিছুর দ্বারা তাঁকে ব্যক্ত করা সম্ভব নয় ।
আমরা আমাদের বুদ্ধি ও মনদ্বারাও তাঁর ধারে কাছেও যেতে পারি
না। অদৃশ্য এবং অব্যক্ত হয়েও, তিনি যখন পরম করুণাবশে
জীবকে দর্শন দান করেন— তখনই আমরা তার দর্শনে ধন্য হ'তে
পারি। কৃতকৃতার্থ হ'তে পারি। নইলে তিনি আমাদের ধরা
ছোয়ার বাইরে। আমাদের জ্ঞান ও বুদ্ধির অগম্য। তিনিই সনাতন
পুরুষ ৷ তিনিই আদি পুরুষ। তিনিই পরম পুরুষ। তিনিই একমাত্র
পুরুষ। তিনিই পরম গতি। তিনি সর্ব্বে শ্বর। তিনিই
পরমেশ্বর ।
ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমিতে যখন কোন ভাগ্যবান জীব— ভগবানের প্রিয়
কোন্ ব্যক্তির যাদৃচ্ছিকী কৃপা লাভ করে—তখনই তাঁর কৃপায় ধন্য
হয়ে আত্মজ্ঞান লাভ করে।
আত্মজ্ঞান লাভের পরেই—সকল দুঃখ অপনোদিত হয়, সকল
সংশয়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। কৰ্ম্মাকর্শের অবসান হয়। আমাদের
হৃদয়গ্রন্থি ঈশ্বরের প্রিয়জনের কৃপাদৃষ্টিতেই ছিন্ন হয়। জড়দেহ
তখন আর স্বীয় দেহরূপে প্রতীত হয় না। আমাদের জড়দেহ এবং
ভাবদেহ হৃদয়গ্রন্থির মাধ্যমে সংযুক্ত, যতক্ষণ না সেই হৃদয়গ্রন্থি ছিন্ন
হয়— ততক্ষণ পর্য্যন্ত জড়দেহকেই আমরা আমাদের আপন সত্বা
বলে ভাবি৷ জড়দেহের সুখ-দুঃখকেই আমরা আপন আপন সুখ
দুঃখ বলে অনুভব করি। কিন্তু ভগবানের প্রিয়জনের কৃপাদৃষ্টিতে
যখন হৃদয়গ্রন্থি বিচ্ছিন্ন হয়—তখন জড়দেহ থেকে আমাদের ভাবদেহ
পৃথক হয়। জড়দেহ ক্ষণভঙ্গুর। কিন্তু ভাবদেহ অঞ্জর, অমর, অব্যয়।
জড়দেহের বৃদ্ধি সাধনের জন্য যেমন চাল, ডাল ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্যাদির
প্রয়োজন, তেমনি ভাবদেহের পুষ্টি সাধনের জন্য ভগবানের কথা
কীর্ত্তন, শ্রবণ ও লীলারস আস্বাদন প্রয়োজন। ভাবদেহের মাধ্যমেই
ভগবানের সান্নিধ্য লাভ সম্ভব।
শ্রীমন্মহাপ্রভু আরও বললেন—
শ্রীকৃষ্ণই ভগবান স্বয়ং। তিনি সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ তিনি সর্ব্ব
নিয়স্তা।
পরম করুণা ভরে শ্রীমন্মহাপ্রভু আরো বললেন — ‘জীব নিত্য কৃষ্ণ
দাস।
বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া শ্রীকৃষ্ণতত্ত্বকে শ্রীমন্মহাপ্রভু
নিজের জীবন ও বাণীর মধ্যে নূতনরূপে তুলে ধরলেন আমাদের কাছে ।
“আপন সভারে প্রভু করে উপদেশে ।
কৃষ্ণনাম মহামন্ত্র শুনহ হরিষে ॥
প্রভু বলে কহিলাম এই মহামন্ত্র ।
ইহ। জপ গিয়া সবে করিয়৷ নিৰ্ব্বন্ধ ॥
—চৈতন্য ভাগবত
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ॥
মধ্যখণ্ড ২৩ অং
কলিযুগের মানুষদের প্রতি পরম করুণাবশে তিনি মহামন্ত্র প্রদান
করলেন। মায়াবদ্ধ জীবদের কাছে প্রাথমিক পর্যায়ে কৃষ্ণনাম
রুচিকর নাও হ'তে পারে—কিন্তু অনুদিন ঐ নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে শ্রবণ
ও কীর্ত্তনে—নামে রুচি সঞ্জাত হওয়া স্বাভাবিক।
শ্রীকৃষ্ণ লীলায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রজললনা তথা মহাভাবময়ী রাধার
কাছে ঋণী হয়েছিলেন। 'যে আমাকে যেভাবে ভজনা করে আমি তাকে
সেভাবেই ভজনা করি।'— গীতার মাধ্যমে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে
ছিলেন--ব্রজললনা, তথা মহাভাবময়ী শ্রীরাধার ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণলীলায়
ভগবান সেই প্রতিশ্রুতি পালনে সক্ষম হন্নি । তাই শ্রীরাধার ভাব ও
কান্তিকে স্বীকার করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে গৌররূপে অবতীর্ণ হ’তে
হয়েছিল।
মহারাষ্ট্রীয় দ্বিগ্বিজয়ী মহাপণ্ডিত কাশীধাম নিবাসী প্রবোধানন্দ
সরস্বতী শ্রীগৌরাঙ্গমহাপ্রভু সম্বন্ধে বলেছেন—
অহো ন দুল’ভা মুক্তি ন চ ভক্তিঃ হুদুল ভা।
গৌরচন্দ্র প্রসাদস্ত বৈকুণ্ঠেহপি সুদুলভঃ ॥
শুধু ঐখানেই তিনি ক্ষান্ত হ’লেন না। শ্রীচৈতন্যচন্দ্ৰামৃত গ্রন্থে
লিখলেন :--
অরে মূঢ় গূঢ়াংবিচিম্বুং হরের্ভক্তি পদবীং,
দবীয়সশস্যা দৃষ্টাপ্যপরিচিত পূৰ্ব্বাং মুনিবরৈঃ ।
জীবের প্রতি পরম করুণাবশে অব্যক্ত সেই ভগবান তার অবিচিন্ত্য
শক্তিপ্রভাবে গৌররূপে অবতীর্ণ।
“অন্তঃক্বষ্ণো বহির্গৌর ॥”
অস্তরে যিনি কৃষ্ণ, বাহিরে তিনি শ্রীগৌরাঙ্গ ।
ভক্তাবতারং ভক্তাখ্যং নমামি ভক্তশক্তিকম্ ॥”
“পঞ্চতত্ত্বাক: কৃষ্ণং ভক্তরূপ স্বরূপকং ৷
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য যার রূপ, শ্রীমন্নিত্যানন্দ যার স্বরূপ, শ্রীমদদ্বৈত
রূপে যিনি ভক্তাবতার, শুদ্ধ-ভক্ত শ্রীবাসাদি রূপে যিনি ভক্তাখ্য
এবং অন্তরঙ্গ ভক্ত শ্রীগদাধর আদি রূপে যিনি ভক্তশক্তি—আমি সেই
পঞ্চতত্ত্বাত্মক শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করি ৷
এবং আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি— তার অসীম করুণাতেই
গৌর-কথা সার্থকরূপে রচনা করা সম্ভব।
শ্রীমন্মহাপ্রভু তাঁর অন্তরঙ্গ পরিকরদের জন্য রসরাজ উপাসনার
প্রবর্তন করলেও, সাধারণ মানুষের জন্য হরিনাম সংকীর্ত্তনের ব্যবস্থা
দিয়েছেন৷ জাতি ও সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র গণ্ডীকে ধ্বংস করে জাতি ধৰ্ম্ম
নির্বিশেষে সকল মানুষকেই তিনি পরমার্থের অধিকার দিয়েছেন ।
তার এই এই দয়ার তূলনা বিরল।
“শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য বাণী অমৃতের ধার ।
তিহেঁ৷ যে কহয়ে বস্তু সেই তত্ত্ব সার ৷৷
ব্রাহ্মণাদি কুক্কুর চণ্ডাল অন্ত করি।
করিবেক সম্মান বহু মান্য করি ৷”
যতেক অস্পৃশ্য দুষ্ট যবন চণ্ডাল।
স্ত্রী শূদ্র আদি যত অধম চণ্ডাল ॥
যিনি স্ত্রী আদি অধম চণ্ডালদেরও পরম করুণাবশে পরমার্থের
অধিকার দিয়েছেন, আমার মতে। অধমও তাই তাঁর পরম করুণার
ওপর ভরসা করেই গৌরকথা কীর্ত্তনে ব্রতী হয়েছি। গৌর-কথা
কীৰ্ত্তন প্রসঙ্গে আমি সকল বৈষ্ণবের চরণে প্রণতি জানাই।