আরো নতুন নতুন ভিডিও পেতে এই চ্যানেলটা সাবস্ক্রাইব করুন
https://m.youtube.com/channel/UCLuQoCm6Ra7BLfpfQyXXojg
সাবস্টেশন কি? সাবস্টেশনের কাজ কি? সেই সাথে ট্রান্সফরমার নিয়ে কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর দেখে নেয়া যাক
সাবস্টেশন হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিবহণ, সঞ্চালন, বিতরণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার একটি অংশ।
পাওয়ার সাব স্টেশন কত প্রকার ও কি কি?
নিচে পাওয়ার সাবস্টেশন সমূহের প্রধান শ্রেণীবিভাগ দেয়া হলো।
Generating Substation:
মুলত পাওয়ার প্ল্যান্ট গুলো যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তাকে জেনারেটিং সাবস্টেশন বলে।
Grid Substation:
পরিবহনকারী তার (transmission line) সমূহ এই গ্রীড সাবস্টেশন নামে পরিচিত।
Secondary Substation:
শিল্পকল-কারখানায় নিজস্ব transformer গুলো সেকেন্ডারি সাবস্টেশন নামে পরিচিত। এগুলো অনেক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন।
Distribution Substation:
বাসা-বাড়ি, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ ইত্যাদি সাধারন ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ যেখান থেকে করা হয়, সেটাই ডিস্ট্রিবিউশন সাবস্টেশন- Distribution Substation.
যতই ঘোরা-ঘুরি করুক, একটি প্ল্যান্ট থেকে তৈরী বিদ্যুৎ আমাদের বাসা পর্যন্ত আসতে কমপক্ষে ৫ টা মাধ্যমের সাহায্য নেয় (এর বেশীও হতে পারে, কিন্তু এই ৫টা লাগবেই লাগবেই)। আসুন দেখি কি কি সেই উপাদান গুলো?
বিদ্যুৎ পরিবহনে যেসব উপাদান বহুল ব্যবহৃত হয়ঃ
প্রথমে Synchronous Machine দ্বারা বিদ্যুৎ তৈরী করা হয়। অতঃপর তা Step up transformer এর মাধ্যমে হাই ভোল্টেজে পরিনত করা হয়।
অতঃপর High voltage Transmission Line এর মাধ্যমে তা পরিবহন করা হয়, এবং নির্দিষ্ট গন্তব্যে প্রেরন করা হয়।
তারপর সেই বিদ্যুৎ কে Step down transformer এর মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী মানে আমাদের ডিভাইস গুলোর জন্য সুইটেবল করা হয়।
অবশেষ Load মানে ডিভাইস (লাইট, ফ্যান, টিভি ইত্যাদি) গুলো সেগুলো দিয়ে সচল হয়।
অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন High voltage এ কেন পরিনত করতে হয়? যা উৎপাদন করি সেটা কেন পাঠায় না?
কারন হচ্ছে পরিবহন খরচ ও অন্যান্য লস কমানোর জন্য এটা করা হয়। সূত্র মোতাবেক-
POWER LOSS = I2R বা I2 × L
এখান থেকে দেখা যায় ভল্টেজ বাড়ার সাথে সাথে কারেন্ট কমে যায়। তাই পরিবহনের সময় High voltage এ রূপান্তর করা হয়।
সাবস্টেশন কি? তা জানতে হলে আপনা কে প্রথম জানতে হবে ১৩২ কেবি,৬৬ কেবি,৩৩কেবি,১১ কেবি,৪৪০ কেবি,২২০ কেবি এসব কি?
১৩২ কেবি হল এক পাওয়ার স্টেশন থেকে আরেক পাওয়ার স্টেশন যেথে ব্যাবহার করা হয়।
৬৬ কেবি হল কোনো শহরে প্রবেশ করে। আর ৩৩ কেবি হল শহর প্রবেশ করে যা বাহির হয় তা হল ৩৩ কেবি।
এ ৩৩ কেবি হল সাবস্টেশন। যা সেখান থেকে ৪৪০ ওয়াট বাহির হয় আর ৪৪০ থেকে আমরা বাসা বাড়ী ব্যাবহার করি ২২০ ওয়াট।
ট্রান্সফরমার নিয়ে কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর দেখে নেয়া যাক।
প্রশ্ন-. একটি ট্রান্সফরমারের নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ ব্যতীত অন্য কোন ভোল্টেজে কি ট্রান্সফরমার চালানো যেতে পারে?
উত্তরঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ট্রান্সফরমার নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ অপেক্ষা কম ভোল্টেজে চালান যেতে পারে। যদি ট্যাপ প্রদান করা না হয়ে থাকে তাহলে ট্রান্সফরমার নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ অপেক্ষা বেশি ভোল্টেজে চালান উচিত নয়। যদি নির্ধারিত ভোল্টেজ অপেক্ষা কম ভোল্টেজে ট্রান্সফরমার চালান হয়, তাহলে এর KVA রেটিংও ক্রমান্বয়ে কমে যাবে।
উদাহরণস্বরূপঃ যদি কোন ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ভোল্টেজ ৪৮০ ভোল্ট ও সেকেন্ডারি ভোল্টেজ ২৪০ ভোল্ট হয়ে থাকে এবং এটি যদি ২৪০ ভোল্টে অপারেট করা হয় তাহলে সেকেন্ডারি ভোল্টেজ হ্রাস পেয়ে হবে ১২০ ভোল্ট। যদি ট্রান্সফরমারটির রেটিং ১০KVA হয়ে থাকে তাহলে সেটি হয়ে যাবে ৫ KVA অথবা প্রদত্ত ভোল্টেজের সমানুপাতিক হবে।
প্রশ্ন- . ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা বেশি হয়ে থাকে কেন?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমার একটি স্ট্যাটিক ডিভাইস অর্থাৎ স্থির যন্ত্র। এতে কোন ঘূর্ণায়মান অংশ নেই, ফলে ঘর্ষণজনিত কোন ক্ষয় বা লস এতে নেই। অন্যান্য ঘূর্ণায়মান যন্ত্রের তুলনায় ট্রান্সফরমারে লস অনেক কম। তাই ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা সবচাইতে বেশি। ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা ৯৫%-৯৮% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রশ্ন- . ট্রান্সফরমারের রেটিং kW এ না লিখে kVA লেখা হয়ে থাকে কেন?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের মোট লস= কোর লস + কপার লস। কোর লস নির্ভর করে ভোল্টেজ এর উপর এবং কপার লস নির্ভর করে কারেন্টের উপর, কিন্তু ট্রান্সফরমারের মোট লস কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যবর্তী ফেজ কোণের উপর নির্ভর করেনা। kW এর সাথে পাওয়ার ফ্যাক্টর বা কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যবর্তী ফেজ এঙ্গেল জড়িত কিন্ত kVA এর সাথে পাওয়ার ফ্যাক্টর থাকেনা। এজন্য ট্রান্সফরমারের রেটিং kW এ না লিখে kVA লেখা হয়ে থাকে।
প্রশ্ন- ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং কাকে বলে? ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং করার শর্ত কি কি?
উত্তরঃ অনেক সময় ৩ ফেজ ট্রান্সফরমার ব্যবহার না করে তিনটি ১ ফেজ ট্রান্সফরমার এর সাহায্যে ৩ ফেজ সাপ্লাই দেয়া হয়, এই ব্যবস্থাকে ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং বলে।
ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং করার শর্তঃ
১) প্রতিটি ট্রান্সফরমার এর kVA রেটিং একই হতে হবে।
২) প্রতিটি ট্রান্সফরমার এর ভোল্টেজ রেটিং একই হতে হবে।
৩) সঠিক পোলারিটি অনুযায়ী সংযোগ দিতে হবে।
প্রশ্ন- অটো ট্রান্সফরমার সম্পর্কে লেখ। এর ব্যবহার লিখ।
উত্তরঃ অটো ট্রান্সফরমার এমন এক ব্যাতিক্রমি ট্রান্সফরমার যার মধ্যে কেবল একটি ওয়াইন্ডিং থাকে। ইহার কিছু অংশ প্রাইমারি আর কিছু অংশ সেকেন্ডারি, উভয় কয়েল ইলেকট্রিক্যাল ও ম্যাগনেটিক্যালি সংযুক্ত থাকে। তারপরও একে ট্রান্সফরমার বলা হয়, কারণ ইহার কার্যপ্রণালী দুই ওয়াইন্ডিং ট্রান্সফরমার এর মতই।
এর ব্যবহারঃ
১) ডিস্ট্রিবিউশন লাইনে ভোল্টেজ ঘাটতি পুরনে ইহা ব্যবহার করা হয়।
২) ৩-ফেজ ইন্ডাকশন মোটর চালু করার কাজে ব্যবহার হয়।
৩) রাজপথ আলোকিত করার কাজে ইহা ব্যবহার হয়।
৪) রেডিও ইলেক্ত্রনিক্সে ইহা ব্যবহার করা হয়।