Budgerigar Bird Breeding | খুব সহজে পাখিকে ডিম বাচ্চা করানো | বাজারিগার পাখির ব্রিডিং | Pakhi Palon
বাজরিগার পাখি পালন ও বাজরিগার পাখির ব্রিডিং বিষয়ক এই কন্টেন্ট এ আপনি জানবেন আপনি আপনার বাজিগর পাখিকে কিভাবে ব্রিট করাবেন মানে বাজরিগার পাখিকে কিভাবে ডিম বাচ্চা করাবেন ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখলে আশাকরি বাজরিগারের ব্রিডিং নিয়ে আপনার আর কোন প্রব্লেম থাকবে না।
ডিম বাচ্চা উৎপাদন করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে বাজিগর পাখিকে কিভাবে জোড়া দিতে হয় । নতুন দুইটা ছেলে ও মেয়ে পাখিকে যদি সরাসরি এক খাচার মধ্য দিয়ে দেন তবে প্রথম দিকে সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় পাখিকে মারামারি করতে দেখা যায়। এজন্য পাখির জোড়া দেয়ার সবচাইতে ভালো নিয়ম হচ্ছে দুইটা পাখিকে আলাদা আলাদা খাঁচায় রাখা। প্রথমে আপনি যে খাচাটার মধ্যে পাখিকে ব্রিড করাতে চাচ্ছেন সেই খাচাটার মধ্যে ছেলে পাখিটাকে দিয়ে রাখুন। এরপর এর পাশেই একটা খাঁচায় মেয়ে পাখিকে দিয়ে রাখুন। এভাবে পাশাপাশি খাঁচায় দুইটা পাখিকে অন্তত ছয় সাত দিন রেখে দেন। সাত দিন পর মেয়ে পাখিটাকে ছেলে পাখিটার খাঁচার মধ্যে দিয়ে দেন । এ পদ্ধতিতে কিন্তু আপনি খুব সহজেই পাখির জোড়া টা দিতে পারেন। পরবর্তীতে আপনার কাজ হবে সাত দিন অপেক্ষা করা। পাখিগুলোকে একসাথে দেওয়ার সাত দিন পর খাচার ভেতর একটা হাঁড়ির ব্যবস্থা করে দিন। বাজিগার পাখির জন্য কিন্তু মাঝারি সাইজের হাড়ি ব্যবহার করতে হয় মোটামুটি ভেতরে 8 ইঞ্চির মত জায়গা আছে এরকম হারি হলেই হয়। বেশি ছোট হাড়ি দিলে পাখি বাচ্চাদের ঠিকভাবে খাওয়াতে পারে না এবং গাদাগাদি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে আবার হাড়িটা যদি খুব বেশি বড় হয় তবে ডিমে তা দেওয়ার সময় ডিমগুলো অতিরিক্ত নড়াচড়া করে। আর এজন্যই বাজিগার এর জন্য মাঝারি সাইজের হাড়ি প্রেফার করা হয়।
বাজরিগার পাখির ব্রিডিং এর পরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে পাখির থাকার পরিবেশ নিশ্চিত করা। আমাদের মধ্যে অনেকেই পাখির খাঁচা কে নড়াচড়া করে। মানে খাচাটা রাতের বেলা ঘরের ভেতর নিয়ে রাখে এবং দিনের বেলায় এটাকে বাইরে নিয়ে রাখে। এই কাজটা কখনোই করা যাবে না। বাজরিগার পাখির খাঁচা আপনি যেখানে রাখবে সেখানেই সবসময় রাখতে হবে এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আপনি ঘরের ভেতরেও খাঁচা রাখতে পারেন বারান্দায় রাখতে পারেন বা বাইরে রাখতে পারেন তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে আপনার পাখির খাচাটা যেখানে রয়েছে সেখানে যেন মানুষের যাতায়াত একেবারে কম হয়। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি পাখির খাচাটা রাস্তার সাথে রাখেন বা সবসময় মানুষ যাতায়াত করে এরকম কোন জায়গায় বা ড্রইং রুমে রাখেন সেক্ষেত্রে কিন্তু পাখি প্রচুর ডিস্টার্ব ফিল করে। তাই পাখিকে অবশ্যই প্রাইভেসি দিতে হবে এবং একটা নির্জন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের চলাচল করে এবং মানুষের যাতায়াত কম। তাছাড়া ইঁদুর-বিড়াল তেলাপোকা এ সমস্ত প্রাণী গুলো যদি পাখিকে ডিস্টার্ব করে সেক্ষেত্রে কিন্তু বাকি সব সময় ভয়ে থাকে এজন্য তারা ডিম বাচ্চা করে না। তাই পাখি পালবার সময় আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে এই প্রাণীগুলো যাতে আপনার বাসায় একেবারেই না থাকে। বিশেষ করে ইঁদুর তেলাপোকা ও টিকটিকি থাকলে এগুলো কে মারার ব্যবস্থা প্রথমে করুন তারপর পাখিকে কিনুন।
বাজরিগার পাখির ব্রিডিং এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পাখির জন্য পর্যাপ্ত আলো ব্যবস্থা করা। এজন্য আপনাকে দেখতে হবে প্রাকৃতিক ভাবে পাখি কি পরিমান আলো পায়। আপনি যদি আপনার পাখির খাঁচার উপর সারারাত লাইট জ্বালিয়ে রাখেন সে ক্ষেত্রে কিন্তু পাখিগুলো স্ট্রেসে এসে পড়বে এবং তারা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না। এজন্য পাখির খাঁচা যেখানে রাখবেন সেই জায়গাটায় সাথে রাতের বেলা কোনোভাবেই ভালো না চলে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ রাত হচ্ছে পাখির ঘুমের সময় আর এরা এ সময় যদি ঠিকভাবে ঘুমাতে না পারে তবে তাদের থেকে আপনি কোনোভাবেই ডিম বাচ্চা আশা করতে পারেন না। সবদিক বিবেচনা করে বাজিগার পাখি রাখার সবচাইতে ভালো জায়গা হচ্ছে একে বারান্দায় রাখা। যেখানে প্রচুর আলো বাতাস থাকে এবং প্রাকৃতিক ভাবে যতক্ষণ সূর্যের আলো থাকে ততক্ষণ পাখি আলো পায় এবং যতক্ষণ সূর্যের আলো থাকে না ততক্ষণ সে কোন লাইট বা আর্টিফিশিয়াল লাইটের নিচে থাকে না। আপনি যদি পাখির সঠিক বিডিং চান তবে আপনি সর্বোচ্চ রাত আটটা পর্যন্ত লাইট জ্বালিয়ে রাখতে পারেন এরপর আপনার পাখির খাঁচা গুলো পুরোপুরি অন্ধকার করে দিতেই হবে।
১, পাখিকে ব্রীডিং করানোর পূর্বে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে আপনার পাখিগুলো সুস্থ সবল আছে কিনা। কারণ পাখি যদি পুরোপুরি সুস্থ সবল থাকে তবেই তাকে দিয়ে ডিম বাচ্চা করানো যাবে। আপনি যদি আপনার বাজিগারের খাঁচা তে প্রতিদিন দুইবার করে পানি পরিবর্তন করে দেন এবং একবার করে খাবার পরিবর্তন করে দেন তবে আপনার পাখির রোগ বালাই ও সম্ভাবনা 75 শতাংশ কমে যাবে । শুধুমাত্র এই দুইটা কাজ করলে আপনার পাখিগুলো বেশিরভাগ সময় সুস্থ সবল থাকবে। এছাড়া পাখির পায়খানার ট্রেটা দুই থেকে তিন দিন পর পর একবার করে পরিষ্কার করে দিতে হবে এই কাজটা যদি আপনি করতে পারেন তবে ধরে নিতে পারেন আপনার পাখি দরবারে সুস্থ থাকবে।
২, পাখিকে ব্রিডিংয়ের দেয়ার আগে অবশ্যই তার বয়স সম্পর্কে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে কমপক্ষে 6 মাস বয়সের প্রার্থী কে ভেঙে দেওয়া যায় তবে ভালো হচ্ছে 8 মাস বয়সের পাখিকে ব্রীডিং এ দেয়া । বিল্ডিং এর উপযুক্ত মেয়ে পাখিগুলোর ঠোঁটের রং ব্রাউন বা বাদামি কালার ধারণ করবে। আর ছেলে পাখিগুলোর ঠোটের উপরে নাকের ঝিমলির অংশটা হবে গারো নীল রঙের। এই দুইটা জিনিস নিশ্চিত হয়ে তারপর পাখিকে ব্রিডিংয়ের দিবেন। তারমানে মেয়ে পাখি গুলোর নাকের জিন্দি যখন গাঢ় বাদামী রং ধারণ করবে এবং ছেলে পাখির নাকের ছিলি যখন কারো নীল রঙ ধারণ করবে শুধুমাত্র তখনই পাখিকে ব্রিডিং এ দেয়া উচিত।