মহাভারতের ত্রিকোন প্রেমের কাহিনী দেবযানী, যযাতি শর্মিষ্ঠা। Trikon premer kahani jajati devjani sharmistha
#হিন্দুশাস্ত্রকথা #মহাভারতকৃষ্ণকথা #পুরান #mahabharat
আজকের কাহিনী শুরু করার আগে বলে রাখি সেই সময়ে অসুরদের রাজা ছিলেন বৃষপর্বা এবং অসুরদের গুরুদেব ছিলেন শুক্রাচার্য। রাজা বৃষপর্বার কন্যার নাম ছিল শর্মিষ্ঠা এবং শুক্রাচার্যের কন্যার নাম ছিল দেবযানী।
এইবার শুরু হচ্ছে কাহিনী
একদিন দেবরাজ ইন্দ্র একটি বনের ধারে বেড়াতে বেরিয়ে দেখলো সেখানে কয়েকজন রূপসী নারী পুকুরে নেমে স্নান করছে। তাই দেখে ইন্দ্রের মনে দুষ্টমি বুদ্ধি এলো, ইন্দ্র বায়ু হয়ে সবার জামা-কাপড় একসাথে মিশিয়ে দিলো। মেয়ে গুলির মধ্যে ছিলো শুক্রাচার্যের কন্যা দেবযানী এবং অসুররাজ বৃষপর্বার কন্যা শর্মিষ্ঠা। শর্মিষ্ঠা ভুল করে দেবযানীর কাপড় পরে ফেলে। তাই দেখে দেবযানী গেলো রেগে। শর্মিষ্ঠাকে অসুরী, সদাচারহীনা বলে গালি দিয়ে বললো, তুই আমার কাপড় পরলি কেনো?
গালি শুনে শর্মিষ্ঠাও রেগে গেলো। দেবযানীকে বললো তোর পিতা গুরুদেব হলেও আসলে আমার পিতার কর্মচারী, আমার পিতার দানে তোদের সংসার চলে। তুই যাচকের অর্থাৎ যে চেয়ে-চিন্তে তার খায় কন্যা, আমি দাতার কন্যা।
ক্রমশ দেবযানী ও শর্মিষ্ঠার মধ্যে বস্ত্র নিয়ে বিবাদ বাড়তেই থাকলো।
দেবযানী নিজের কাপড় নেওয়ার জন্য কাপড় ধরে টানতে লাগলো, তখন শর্মিষ্ঠা তাঁকে এক কূপের মধ্যে ঠেলে ফেলে দিয়ে নিজের বাড়ি চলে গেলো।
সেই সময় হরিণ শিকার করতে বেরিয়ে ক্লান্ত ও পিপাসিত হয়ে এক রাজা যার নাম যযাতি সে সেই কূপের কাছে উপস্থিত হলো। রাজা যযাতি দেখলো কূপের মধ্যে রূপসী এক কন্যা পরে আছে। দেবযানী নিজের পরিচয় দিয়ে বললো তাকে হাত ধরে টেনে তুলতে। যযাতি দেবযানীকে উদ্ধার করে সেখানে রেখে নিজের রাজধানীতে ফিরে চলে গেলো।
দেবযানীর দাসীর মুখে ঝগড়ার খবর শুনে শুক্রাচার্য তখনই সেখানে এলো। দেবযানী তার বাবাকে শর্মিষ্ঠার বলা সকল কথা জানালো। সব শুনে শুক্রাচার্য বলল - "যিনি সজ্জন তাঁর পক্ষে নিজের গুণবর্ণনা কষ্টকর।" ওঠ আমরা শর্মিষ্ঠাকে ক্ষমা করে দিই, কারণ "সাধুজনের ক্ষমাই শ্রেষ্ঠ গুণ। ক্ষমার দ্বারা ক্রোধকে যে নিরস্ত করতে পারে সে সর্ব জগৎ জয় করে"।
দেবযানী বললো - কিন্তু পন্ডিতরা বলেন নীচ লোকের কাছে অপমানিত হওয়ার চেয়ে মরণ ভাল। অস্ত্রাঘাতে যে ক্ষত হয় তা সারে কিন্তু বাকক্ষত সারে না।
মেয়ের কথা শুনে শুক্রাচার্য এবার দানবরাজ বৃষপর্বার কাছে গিয়ে বললো- "পাপের ফল সদ্য দেখা যায় না, কিন্তু যে বার বার পাপ করে সে সমূলে বিনষ্ট হয়"। আমার নিষ্পাপ শিষ্য কচকে তুমি বার বার হত্যা করিয়েছিলে। তোমার মেয়ে শর্মিষ্ঠা আমার কন্যাকে নানান কটু কথা বলে শুনিয়েছে। শেষে তাকে কূপে ফেলে দিয়েছে। আমরা আর তোমার রাজ্যে বাস করব না।
দানবরাজ বৃষপর্বা শুক্রচার্যকে নানান ভাবে অনুনয় বৃষপর্বা চেষ্টা করতে লাগলো। কারণ রাজা বিষ পর্ব শুক্রাচার্যকে অনেক বেশি সম্মান করতেন। তখন শুক্রচার্য বললো যদি দেবযানী থাকতে রাজি হয় তাহলে আমিও থাকতে রাজি আছি।
দানবরাজ বৃষপর্বা দেবযানীর কাছে গিয়ে তাঁর পায়ে পড়ে বললো, দেবযানী তুমি যা চাইবে তাই দেব। শুধু এই রাজ্য ছেড়ে চলে যেও না।
দেবযানী বললো- সহস্র কন্যার সহিত শর্মিষ্ঠাকে আমার দাসী হতে হবে, আমার বিয়ে হলে তারা আমার সঙ্গে যাবে।
শুক্রাচার্যের রোষ থেকে বাঁচতে শর্মিষ্ঠাও দেবযানীর দাসীত্ব স্বীকার করে নিলো।
দেবযানী, শর্মিষ্ঠা ও রাজা যযাতির ত্রিমুখী প্রেম
একদিন দেবযানী শর্মিষ্ঠা ও সহস্র দাসীর সঙ্গে বনে বেরাতে গেলে সেখানে শিকার করতে আসা রাজা যযাতি উপস্থিত হয়। যযাতি দেখলেন, রত্নখচিত স্বর্গীয় এক আসনে অপরূপ রূপসী স্বর্ণালংকারে সজ্জিত দেবযানী বসে আছে। স্বর্ণালংকারে সজ্জিত রূপে অতুলনীয়া অন্য একটি মেয়ে নিচু একটি আসনে বসে দেবযানীর পদসেবা করছে।
রাজা যযাতি দেবযানীর সাথে আলাপ করতে লাগলেন। দেবযানী নিজেদের পরিচয় দিলেন। দেবযানির চেয়েও অধিক সর্বাঙ্গসুন্দরী অসুররাজকন্যা শর্মিষ্ঠাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলো। অসুররাজকন্যা শর্মিষ্ঠা দেবযানির দাসী সেটা জানতে পেরে রাজা অবাক হলো।
এদিকে রাজা যযাতিকে দেখে দেবযানীর খুব পছন্দ হয়ে যায়। তাই সে রাজাকে বলে তাকে বিয়ে করলে শর্মিষ্ঠা আর সমস্ত দাসী রাজার অধিন হবে। যযাতি ক্ষত্রিয় রাজা বলে ব্রাহ্মণ কন্যা দেবযানীর প্রস্তাবে রাজি হয় না। , সুন্দরী , আমি আপনার যোগ্য নই , আপনার পিতা, ক্ষত্রিয় রাজাকে কন্যাদান করবেন না। দেবযানী জানালো ব্রাহ্মণ আর ক্ষত্রিয় পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত। দেবযানী তখন তাঁর পিতাকে ডেকে এনে বললো এই রাজা যযাতি কূপ থেকে তাঁকে উদ্ধার করেছিলেন। আপনি আমাকে এর সাথে বিয়ে দিন। আমি একে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো না।
শুক্রচার্য মেয়ের আবদারে রাজি হয়ে যথাতি কে বললেন আমি আমার মেয়ে দেবযানীকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম। আর বৃষপর্বার কন্যা কুমারী শর্মিষ্ঠাকে স্বসম্মানে রাখবে। কিন্তু একে কখনো শয্যাসঙ্গী করোনা।
দেবযানী শর্মিষ্ঠা আর দাসীদের নিয়ে যযাতি তাঁর রাজধানীতে ফিরে গেলেন। দেবযানীকে নিজের মহর্ষী করে প্রাসাদে স্থান দিলেন।
দেবযানীর অনুমতি নিয়ে তিনি অশোক বনের কাছে শর্মিষ্ঠার জন্য আলাদা বাড়ি নির্মাণ করে দিলেন। সহস্র দাসীও শর্মিষ্ঠার কাছে রইল।
অনেক দিন পরে দেবযানীর একটি ছেলে জন্ম নিলো। তাই দেখে শর্মিষ্ঠা ভাবলো তারও একজন স্বামী চাই, পুত্র চাই, নইলে তার এই ভরা যৌবন বৃথা হয়ে যাবে।
All The Images And Pictures In The Video Shows Belonges Respected Owners And Not Me DISCLAIMER:- Copyright disclaimer under section 107 of the Copyright Act 1976, allowanec is made for "fair use" for purposes such as criticism, comment, news, reporting, teching, schoolarship, education, and research. Fair use is a use permitted by copyright statute that might otherwise be infringing. Non-profit, educational or personal use tips the balance in favour of fair use.