নবিজীর জীবনী বয়ান করে হাজার হাজার মানুষকে কাঁদালেন মাওলানা আফসার আলী Maulana Afsar ali new bayan
নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন ধৈর্যের এক অনন্য উদাহরণ। তিনি তাঁর জীবনজুড়ে নানান বিপদ-আপদের সম্মুখীন হয়েছেন, কিন্তু সবসময় ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।
নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ধৈর্যের কিছু উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
১. কুরাইশদের অত্যাচারের মুখেও ধৈর্য
মক্কার কুরাইশরা যখন নবী (সা.)-কে ও তাঁর অনুসারীদের কঠোর নির্যাতন করেছিল, তখন তিনি কখনো প্রতিশোধ নেননি। বরং ধৈর্য ধারণ করে তাদের জন্য হেদায়েতের দোয়া করেছেন।
২. তাইফের ঘটনা
নবুয়তের দশম বছরে নবী (সা.) ইসলামের দাওয়াত দিতে তাইফে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার লোকেরা তাঁকে বিদ্রুপ করে, পাথর ছুড়ে রক্তাক্ত করে দেয়। এত কষ্টের পরও তিনি ধৈর্য ধরে আল্লাহর কাছে তাদের জন্য দোয়া করেছিলেন—
"হে আল্লাহ! তুমি যদি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট না হও, তবে এই কষ্ট আমি সহ্য করতে রাজি।"
৩. উহুদের যুদ্ধ ও প্রিয়জনের মৃত্যু
উহুদের যুদ্ধে নবী (সা.)-এর চাচা হামজা (রা.) শহীদ হন। তাঁর দেহ বিকৃত করা হয়। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পরও নবী (সা.) ধৈর্য ধারণ করেন এবং ক্ষমা ও সহানুভূতির শিক্ষা দেন।
৪. মক্কা বিজয়ের সময় ক্ষমা প্রদর্শন
দীর্ঘ ১৩ বছর কুরাইশরা নবী (সা.)-কে ও মুসলমানদের উপর অত্যাচার করেছে। কিন্তু যখন তিনি বিজয়ের সাথে মক্কায় প্রবেশ করলেন, তখন কোনো প্রতিশোধ নেননি। বরং ঘোষণা করলেন—
"আজ তোমাদের জন্য কোনো প্রতিশোধ নেই, তোমরা সবাই মুক্ত।"
ধৈর্য সম্পর্কে নবী (সা.)-এর শিক্ষা
নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন—
🔹 "যে ধৈর্য ধরতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্যের শক্তি দেন।" (বুখারি, মুসলিম)
🔹 "ধৈর্য হল ঈমানের অর্ধেক।" (ইবনে মাজাহ)
উপসংহার
নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন আমাদের শিখিয়েছে, ধৈর্য শুধু কষ্ট সহ্য করা নয়, বরং দয়া, ক্ষমা ও বিশ্বাসের মাধ্যমে কঠিন সময় মোকাবিলা করা। তাঁর জীবনী থেকে আমাদের ধৈর্যশীল ও সহনশীল হওয়ার শিক্ষা নিতে হবে।
নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী। তিনি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে (আনুমানিক) সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ এবং মাতার নাম আমিনা। জন্মের আগেই তাঁর পিতা মারা যান এবং অল্প বয়সেই তিনি মাতাকে হারান। পরবর্তীতে দাদা আবদুল মুত্তালিব ও পরে চাচা আবু তালিব তাঁকে লালন-পালন করেন।
নবুয়ত লাভ
৪০ বছর বয়সে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রথম ওহি নাজিল হয়। জিবরাইল (আ.) তাঁকে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেন এবং তিনি নবুয়ত লাভ করেন। এরপর তিনি মানুষকে তাওহিদের দিকে আহ্বান করতে শুরু করেন।
ইসলাম প্রচার ও হিজরত
প্রথমে মক্কার মানুষ তাঁর বার্তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের কঠোর নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে আল্লাহর নির্দেশে তিনি মদিনায় হিজরত করেন। এখানেই ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ইসলাম ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।
যুদ্ধ ও বিজয়
মদিনায় থাকাকালীন তিনি বদর, উহুদ ও খন্দকের মতো গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি মক্কা বিজয় করেন, কিন্তু শত্রুদের ক্ষমা করে দেন।
মৃত্যু
৬৩২ খ্রিস্টাব্দে (৬৩ বছর বয়সে) নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর রেখে যাওয়া শিক্ষা ও আদর্শ আজও মুসলমানদের জন্য পথনির্দেশক।
মূল শিক্ষা
তিনি তাওহিদ (একত্ববাদ), ইনসাফ, ন্যায়বিচার, দয়া ও মানবতার শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁর চরিত্র ছিল মহান এবং তিনি "আল-আমিন" (বিশ্বস্ত) নামে পরিচিত ছিলেন।
"তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সেই, যে চরিত্রে উত্তম।" – নবী মুহাম্মদ (সাঃ
@assam islamic media
@assam islamic meedia #waz_mahfil