১/সকাল-সন্ধ্যায় আয়াতুল কুরসী
হযরত উবাই ইবনে কা‘ব রা. থেকে বর্ণিত, তাঁর একটি খেজুর শুকানোর জায়গা ছিল। তাতে খেজুর হ্রাস পেত। এক রাতে তিনি পাহারায় রইলেন। হঠাৎ তিনি কিশোরের মতো এক প্রাণী দেখতে পেলেন। সে তাকে সালাম দিল। তিনি সালামের জবাব দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কোন্ জাতির? জিন না মানব? সে বলল, জিন। তিনি বললেন, তোমার হাত দাও তো দেখি। সে হাত বাড়িয়ে দিল। দেখা গেল তার হাত ও পশম কুকুরের হাত ও পশমের মতো। সে বলল, এটা জিনের গঠন। সে আরো বলল, জিনেরা জানে, তাদের মধ্যে আমার চেয়ে শক্তিশালী আর কোনো পুরুষ নেই। তিনি বললেন, কী উদ্দেশ্যে এসেছ? সে বলল, আমি জানতে পেরেছি, আপনি সাদাকা করতে পছন্দ করেন। তাই আপনার খাদ্যবস্তু (খেজুর) থেকে নিতে এসেছি। তিনি বললেন, তোমাদের (অনিষ্ট) থেকে আত্মরক্ষার উপায় কী? সে বলল, সূরা বাকারার এই আয়াতটি
اَللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَیُّ الْقَیُّوْمُ...
যে তা সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত আমাদের (অনিষ্ট) থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকবে। আর যে সকালে পড়বে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের (অনিষ্ট) থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকবে। সকালে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বিষয়টি জানালেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, খবীস সত্য বলেছে।সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৮৪
২/সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি- যে ব্যক্তি ভোরে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিষ ও যাদু-টোনা তার ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী ও মুসলিম)
সহীহ : বুখারী ৫৪৪৫, ৫৭৬৮, ৫৭৬৯, ৫৭৭৯; মুসলিম (২০৪৭)
রাসূল ﷺ অল্প কথা বলতেন, কিন্তু তা হত ব্যাপক অর্থ বহুল হত। (তিরমিযী)
আয়েশা( রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) বলেন, আজওয়া খেঁজুর রোগ নিরাময়কারী এবং প্রাতঃকালীন প্রতিষেধক। (সহীহ মুসলিম)
একদিন সাহাবী সাদ (রাঃ) এরও এমন হার্টের সমস্যা হয় এবং রসূল (ﷺ) তাকে আজওয়া খেঁজুর খাওয়ার পরামর্শ দেন। . (আবু দাউদ ৩৮৩৫)
আলী (রাঃ) বলেন, “যে প্রতিদিন সাতটি খেঁজুর খায়, এটা তার পেটের রোগ গুলোকে মেরে ফেলে। (কানজুল উম্মাল ২৮৪৭২) .
তোমরা নিজ হাতে নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিয়ো না।’ (সুরা :বাকারা, আয়াত : ১৯৫)
৩/আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ’উক্ল নামক গোত্রের আট ব্যক্তির একটি দল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এল। মদিনার আবহাওয়া তারা উপযোগী মনে করেনি। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের জন্য দুগ্ধবতী উটনীর ব্যবস্থা করুন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা বরং সাদাকার উটের পালের নিকট যাও। তারা সেখানে গিয়ে সেগুলোর পেশাব ও দুধ পান করে সুস্থ এবং মোটাতাজা হয়ে গেল। অতঃপর তারা উটের রাখালকে হত্যা করে উটের পাল হাঁকিয়ে নিয়ে গেল এবং মুসলিম হবার পর তারা মুরতাদ হয়ে গেল। তখন এক সংবাদ দাতা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়-সওয়ারদেরকে তাদের সন্ধানে পাঠালেন। তখন পর্যন্ত দিনের আলো প্রকাশ পায়নি ’সে সময় তাদেরকে নিয়ে আসা হল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের হাত পা কেটে ফেললেন। অতঃপর তাঁর নির্দেশে লৌহ শলাকা গরম করে তাদের চোখে ঢুকানো হয় এবং তাদেরকে উত্তপ্ত ভূমিতে ফেলে রাখা হয়। তারা পানি চেয়েছিল কিন্তু তাদেরকে পানি দেয়া হয়নি। অবশেষে তাদের মৃত্যু ঘটে। আবূ কিলাবা (রাঃ) বলেন, তারা হত্যা করেছে, চুরি করেছে, আল্লাহ্ তা’আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে এবং পৃথিবীতে ফাসাদ ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছে। বুখারী ৩০১৮(তাওহীদ পাঃ)
৪/নিশ্চয়ই সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। (সূরা আনকাবুত : ৪৫)
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন
যখন তুমি নামাযে দাঁড়াবে, আল্লাহু আকবার বলে নামায শুরু করবে।... এরপর ধীরেসুস্থে রুকু করবে (ধীরে ধীরে সুন্দর করে রুকুর তাসবীহ পড়বে)। রুকু থেকে ধীরেসুস্থে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে (সুন্দরভাবে রব্বানা লাকাল হাম্দ বলবে)। এরপর ধীরেসুস্থে সিজদা করবে (সুন্দর করে ধীরে ধীরে সিজদার তাসবীহ পড়বে)। এরপর ধীরেসুস্থে সিজদা থেকে উঠে সোজা হয়ে বসবে। এভাবে পুরো নামায ধীরেসুস্থে আদায় করবে। (দ্র. সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৫৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৯৭)
৫/যদি মানব ও জ্বিন এই কোরআনের অনুরূপ রচনা করে আনয়নের জন্যে জড়ো হয়, এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়; তবুও তারা কখনও এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না। (কুরআন ১৭:৮৮)
এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো। (কুরআন ২:২৩)
আর কোরআন সে জিনিস নয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কেউ তা বানিয়ে নেবে। অবশ্য এটি পূর্ববর্তী কালামের সত্যায়ন করে এবং সে সমস্ত বিষয়ের বিশ্লেষণ দান করে যা তোমার প্রতি দেয়া হয়েছে, যাতে কোন সন্দেহ নেই-তোমার বিশ্বপালনকর্তার পক্ষ থেকে। মানুষ কি বলে যে, এটি বানিয়ে এনেছ? বলে দাও, তোমরা নিয়ে এসো একটিই সূরা, আর ডেকে নাও, যাদেরকে নিতে সক্ষম হও আল্লাহ ব্যতীত, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক। (কুরআন ১০:৩৭-৩৮)
তারা কি বলে? কোরআন তুমি তৈরী করেছ? তুমি বল, তবে তোমরাও অনুরূপ দশটি সূরা তৈরী করে নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পার ডেকে নাও, যদি তোমাদের কথা সত্য হয়ে থাকে।(১১:১৩)
না তারা বলেঃ এই কোরআন সে নিজে রচনা করেছে? বরং তারা অবিশ্বাসী।যদি তারা সত্যবাদী হয়ে থাকে, তবেএর অনুরূপ কোন রচনা উপস্থিত করুক। (৫২:৩৩-৩৪)
৬/
নিশ্চয় আমি কুরআন* নাযিল করেছি, আর আমিই তার হেফাযতকারী।
সূরা আল হিজির, আয়াতঃ ৯।
৭/
আর তোমরা ইচ্ছা করতে পার না, যদি না সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছা করেন।
সূরা তাগভীর , আয়াত ২৯।