॥অষ্টমঙ্গলার ঝোল- কুমোরটুলির জমিদারবাড়ি ও কেয়া দাশগুপ্ত সিরিজ়॥
যখন কুমোরটুলির সে বিশাল বাড়িটির জানালা দিয়ে হঠাৎ ঘরে ঢুকতো গঙ্গার দমকা বাতাস, যখন কাক ডাকা নির্জন দুপুরবেলায় মেঝেতে জলছড়া দিয়ে পাতা হতো আসন, সাজানো হতো একে একে কাঁসার থালা, ভারী কাঁসার গেলাসে ঢালা হতো জল, বুড়ি পিসি সবাইকে হাঁক পাড়তেন- “খেতে আয় বাপধনেরা! বেলা যে বয়ে যায়!” কড়াই থেকে নামানো হতো ধোঁয়া ওঠা অষ্টমঙ্গলার ঝোল। কোন অনাদিকাল থেকে বয়ে আসা এ রান্না আজও বেঁচে আছে এ বাড়ির রান্নাঘরে। যেমন অনাদিকাল থেকে বয়ে আসা গঙ্গা কথা কয় বাড়ি সংলগ্ন ঘাটের সিঁড়ির সাথে। আট সবজি ও বড়ি দিয়ে পরম মমতায় ভরা এ রান্না পরিবেশন করা হবে প্রথম পাতে। হঠাৎ চোখে কেন জানি জল আসে দুর্গারাণী দেবীর। কেন এমন হয়? কেন হঠাৎ এ রান্নার গন্ধ অজানা কারণে তাঁকে নিয়ে যায় কোন ফেলে আসা দিনের কোলে? অষ্টমঙ্গলার ঝোল। এ কেবল রান্না নয়। এ নিখাদ সোনা। ভালোবাসার পরশমণির ছোঁয়ায় যার সৃষ্টি মনের গভীরে।