বিশ্ব রাজনীতির উঠোনে, নরেন্দ্র মোদি এক্কেবারে একলা।
তখনও আমাদের দেশের ডাইরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশন্স দেশের মানুষকে , সাংবাদ মাধ্যমকে কিছুই জানান নি, দেশের মানুষ ট্রাম্প সাহেবের টুইট দেখে জানতে পারলেন যে তার আগেরদিন নাকি সারা রাত আলোচনার পরেই ভারত – পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং তা লাগু করা হচ্ছে। ট্রাম্প সাহেব আমার দেশের পণ্যের ওপরে ৬০/৮০% ট্যারিফ বসানোর কথা বলেছেন, মোদিজী রা কাড়েন নি। আমাদের দেশের মানুষজনদের হাতে হাতকড়া পরিয়ে সামরিক বিমানে করে দেশে পাঠিয়েছেন, মোদিজী একটা কথাও বলেন নি। আমাদের দেশ যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হল, সেটাও জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, মোদিজী এখনও পর্যন্ত একটা কথাও বলেন নি। দেশের মধ্যে অত্যন্ত পরিচিত এক ট্যুরিস্ট স্পটে পাক উগ্রপন্থীরা ২৭ জনকে খুন করলো, কেন পাক উগ্রপন্থী বলছি, সেটা প্রমাণ সমেত আগামীকাল খোলসা করে বলবো, আজ নয়। কিন্তু এই ২৭ জনকে খুন করা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী হাজির থাকলেন না। শুরু হল অপারেশন সিঁদুর, নরেন্দ্র মোদি এবারেও সর্বদলীয় বৈঠক এ হাজির থাকলেন না, বলা ভালো এড়িয়ে গেলেন। এবারে ট্রাম্প সাহেবের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানা গ্যালো আমার দেশ যুদ্ধ বিরতিতে গেছে, মোদিজী আমাদের কিছুই জানান নি। দেশে প্রবল উত্তেজনা ছিল, কিছু লোকজনদের দেখলে মনে হচ্ছিল পারলে এক্ষণি পাকিস্তান কে গুঁড়ো করে দিয়ে আসবে, সকালবেলায় মর্নিং ওয়াক সেরে কচুরি জিলিবি খাওয়া কেয়া ভাও এর দল তো পাকিস্তানে লাহোর গলিতে নিরামিষ চালু করার কথা ভাবছিলেন। যুদ্ধ শুরু হল, সেদিন শেয়ার মার্কেট পড়েছিল প্রায় ৯০০ পয়েন্ট আর যুদ্ধ বিরতি হবার পরে এই কেয়া ভাওও এর দল এত দুঃখিত যে বাজার চড়েছে প্রায় ৩০০০ পয়েন্ট, তিন শতাংশের বেশি। আদানির শেয়ার বেড়েছে হু হু করে। মানে আসলে এনারা মানে এই বানিয়ার দল কী ভাবছিলেন, সেটা পরিস্কার। কিন্তু সবচেয়ে অবাক করা কথাবার্তাগুলো শুনলাম একজন তথাকথিত সাংবাদিকের মুখে, তিনি যা জানালেন বলছি, ইতিমধ্যে গেস করতে থাকুন এই সাংবাদিকের নাম। তিনি বললেন “সর্বোচ্চ সম্মান রেখেই বলছি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানেনই না এই মাটিতে কী ঘটছে। কয়েকদিন আগেও উনি নিজেই বলেছিলেন এটা ওঁর দেখার বিষয় নয়। আর এখন উনি বলছেন, উনি দুই দেশের মধ্যে শান্তি আনলেন, অভিনন্দন জানাচ্ছেন—বুঝলাম, উনি এখন বিশ্বের শান্তিদূত হতে চাইছেন। কিন্তু এটা একেবারেই ওঁর এক্তিয়ারের বাইরে। আমি জোর গলায় বলছি—আমরা এর প্রবল বিরোধিতা করি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এমন দাবি করছেন যে উনি দুই দেশের মধ্যে আলোচনার বিষয়টা মিটিয়ে ফেলেছেন। আমার মনে হয়, ট্রাম্প বুঝতেই পারছেন না ‘ব্যাক চ্যানেল টক’, ‘ইনফর্মাল কূটনীতি’, ‘গোপন আলোচনার’ আর ‘খোলামেলা কূটনীতির’ মধ্যে পার্থক্য কী। কেউ একজন ওঁকে বোঝান। এটা একেবারে ট্রাম্পের স্টাইলে বাড়াবাড়ি—অযথা ঢুকে পড়া। এটা ট্রাম্পের ধাঁচ, আর এ ব্যাপারে ওঁর কোনও এক্তিয়ার নেই, ম্যান্ডেট নেই এটা জানানোর, তাই এটা আরও বেশি অনুচিত।“ এটা বললেন অর্ণব গোস্বামী। তখনও আমাদের ডিজিএমও সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান নি, উনি ভেবেছিলেন এটা সম্ভবত ট্রাম্প সুলভ বাড়াবাড়ি, উনি মোদি ভক্ত হিসেবেই তার বিরোধিতা করতে নেমেছিলেন, তারপরে সত্যিটা জেনে ম্যানেজ দিতে নেমেছেন।