দুই হাতের আলিঙ্গনে জড়িয়ে নেয় কিশোরী বউ কে।অন্য এক নেশায় আসক্ত কন্ঠে বলে উঠে,"তুমি মরে যাও চৈতি..
পাশ থেকে রেদোয়ান চৌধুরী বললেন,"কিন্তু কল টা তো তোমার ফোন থেকেই আসছে।"
বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো প্রহন,পকেট হাতড়ে দেখলো মোবাইল নেই। বিষয় টা পরিষ্কার হয়ে গেল তার কাছে,সোফায় বসতে বসতে বললো,"মোবাইল তো চুড়ি হয়ে গেছে। আর নয়তো কোথাও পড়ে গিয়েছিল,অন্য কেউ পেয়েছে হয়তো তার এক্সিডেন্ট হয়েছে।"
মিসেস ইয়াসমিন কপালে হাত রাখলেন,প্রহন রেদোয়ান চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,"কোন হসপিটালে আছে বলেছে কিছু? আমার তো মোবাইল টা আনতে যেতে হবে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আছে, তার চেয়ে ও বড় কথা অনেকেরই নাম্বার সেভ করা আছে।"
মিসেস ইয়াসমিন ধীর কন্ঠে হসপিটালের নাম বললেন। প্রহন তখনই যেতে চাইলে যেতে দিলেন না তিনি,ভয় কাটেনি এখনো।"সকালে নিতে যাবে"কড়া গলায় কথা টা বলে দিলেন তিনি। প্রহন আর মায়ের কথার অবাধ্য হলো না, বাড়ির সবার মনের অবস্থা বুঝতে পারছে সে। তবে এই একটা কথা ভেবে ভীষণ ভালো লাগছে তার যে তার পরিবার তাকিয়ে নিয়ে কত চিন্তা করে। রুমে চলে গেল প্রহন, চৈতি বিছানার উপর পা ভাঁজ করে বাবু হয়ে বসে আছে।চুল থেকে পানি পড়ছে,মুখটা ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে,মন খারাপি হাওয়া ছুঁয়ে গেছে তাকে। চোখের কোনে এখনো পানি চিকচিক করছে। সেই সময় মিসেস ইয়াসমিন এর মুখে কথাটা শোনার পর এক মুহুর্তের জন্য মনে হয়েছিল কলিজা টা কেউ টেনে ছিঁড়ে ফেলেছে। প্রহন দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেল চৈতির দিকে, বিছানার উপর তোয়ালে রাখা। তোয়ালে দিয়ে চুল মুছিয়ে দিয়ে চৈতির সামনাসামনি বসলো, চৈতি নিমেষহীন দৃষ্টিতে প্রহনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রহন চৈতির মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,"আচ্ছা তখন কার কথা যদি সত্যি হতো আর আমি যদি মরে যেতাম আমার কথা মনে পড়তো তোমার?"
কথাটা বলার দেরী প্রহনের বুকের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠার দেরি হলো না চৈতির। হঠাৎ প্রহন বুকের ভেতর ব্যাথা অনুভব করলো,ব্যাথায় কাতর না হয়ে মুচকি হেসে চৈতির চুলের উপর চুমু খেলো। মেয়েটা তাকে কামড়াচ্ছে আর বিড়বিড় করছে,"আপনাকে ছেড়ে আমি একদম মরে যাবো।"